বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনাচিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
তার মধ্যে দু’টি পদক্ষেপের উপর বিশেষ জোর দেন তাঁরা: (এক) গরিব মানুষের হাতে সরাসরি নগদ টাকা দিতে হবে। (দুই) শিল্পক্ষেত্রের জন্য ‘ফিসকাল স্টিমুলাস’ নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ করছাড়, শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতনে ভর্তুকি, পিএফ জমায় সরকারের অংশগ্রহণ, বিনা সুদে বা নামমাত্র সুদে ঋণদান, কেন্দ্রকে শিল্পঋণের গ্যারান্টার হতে হবে ইত্যাদি। এই বিষয়ে তাঁরা এমএসএমই-কেই বিশেষভাবে চিহ্নিত করে দেন। কারণ, এই সেক্টরটাই ভারতীয় শিল্পের মেরুদণ্ড। এমএসএমই-র ৯৯ শতাংশ হল স্মল ও মাইক্রো সাইজের। এইসব শিল্প-ব্যবসা মাত্র এক থেকে দু’জনকে দিয়েও দিব্যি চলে। এই শ্রেণী সাধারণ মানুষের মূল চাহিদাটা মেটানোর দায়িত্ব বহন করে। সব মিলিয়ে ভারতের ১১-১২ কোটি পরিবারকে বাঁচিয়ে রেখেছে এমএসএমই। লকডাউনকালে এমএসএমই সেক্টরই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে একাধিক সরকারি ও বেসরকারি সমীক্ষা রিপোর্ট সরকারকে হুঁশিয়ার করেছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য ছিল, এমএসএমই ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য একটি মওকা প্রয়োজন। যে-কোনও সামাজিক উৎসবই এই মওকা হয়ে উঠতে পারে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে এই সুযোগটা নিশ্চিতভাবে দুর্গাপুজো। দুর্গাপুজো হাতে গোনা চারদিনের হলেও, তার আগে-পরে মিলিয়ে টানা দু’মাস বাংলার অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে পুজো। পশ্চিমবঙ্গে পুজোর ব্যস্ততা রথের পর থেকে শুরু হয়। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন থেকে ভাইফোঁটা পর্যন্ত চলে রেশ। বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে দুর্গাপুজোর সুযোগ নিতে হবে। অনুরূপভাবে অন্যসকল রাজ্যের অর্থনীতিকেও তাদের নিজস্ব বড় উৎসবগুলির সুযোগ নিতে হবে।
পুজোকে সামনে রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গকে জাগানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছেন। স্টেট ব্যাঙ্কের রিসার্চ গ্রুপের সর্বশেষ
রিপোর্টে করোনা মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গের বিশেষ প্রশংসা করা হয়েছে। বাংলাকে ভারতের অধিক অগ্রণী রাজ্যগুলির পারফর্ম্যান্সের পাশে রেখেই তাঁরা বিচার করেছেন। তাতে পশ্চিমবঙ্গের তুলনামূলক পারফর্ম্যান্স ‘বেটার’ বলেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সতর্ক করা হয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গ কিন্তু করোনা সংক্রমণের শিখর এখনও ছোঁয়নি। মহারাষ্ট্রে গণেশ চতুর্থী এবং দক্ষিণ ভারতে ওনাম উৎসবের পরই
সংক্রমণ বেশ বেড়েছে। কলকাতা-সহ বাংলার ক্ষেত্রে পুজোয় তাই বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, কলকাতার পুজো মানেই বাঁধভাঙা ভিড়, জনজোয়ার! উৎসবের আনন্দকে বহুবর্ধিত করতে আমাদের এসময় সতর্ক থাকতেই হবে। শিক্ষা নিতে হবে দক্ষিণ ভারত এবং মহারাষ্ট্রের দৃষ্টান্ত থেকে। নাহলে এতদিনের পরিশ্রম, কৃচ্ছ্রসাধন জলেই যাবে। করোনা মোকাবিলার পাশাপাশি অর্থনীতির চাকা ফের সচল করতে বাংলা যে উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পেরেছে—তা বজায় রাখা দুঃসাধ্য হবে।