বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনাচিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী বোল্লা কালী পুজো ঘিরে লক্ষ লক্ষ মানুষের জনসমাগম হয় প্রতিবছর। এদিকে বর্তমানে করোনা আক্রান্তের গ্রাফ যেভাবে ঊর্ধমুখী, তাতে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে অন্যান্যবারের মতোই স্বাভাবিকভাবে পুজো ও মেলার আয়োজন করা যাবে কি না, তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠছে। তাই জেলার পাশাপাশি রাজ্যজুড়ে বোল্লা কালীর ভক্তরাও অধীর আগ্রহে তাকিয়ে রয়েছেন প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের দিকে। বোল্লা কালী পুজো কমিটির ম্যানেজার সঞ্জয় সরকার বলেন, বর্তমানে পুজোর ছুটির কারণে অফিস বন্ধ। তাই আমরা বোল্লা কালীর পুজোর আয়োজনের বিষয়ে প্রশাসনের কাছে আবেদন করতে পারছি না। অফিস খুললেই আবেদন করব। প্রশাসনের নির্দেশিকার দিকে তাকিয়ে রয়েছি আমরা।
দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক নিখিল নির্মল বলেন, বোল্লা কালীর পুজো ও মেলা নিয়ে আমরাও চিন্তিত। পুজো কমিটির তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও আবেদন আসেনি। এলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। তাছাড়া করোনা নিয়ে গঠিত টাস্ক ফোর্সের আগামী বৈঠকে বোল্লা কালীর পুজো ও মেলা নিয়ে আমরা আলোচনা করব।
বোল্লা কালীর পুজো নিয়ে কথিত আছে, আগে ওই এলাকায় এক জমিদার ছিলেন। তাঁর নাম ছিল বল্লভ চৌধুরী। তাঁর নাম অনুসারেই এলাকার নাম হয়েছে বোল্লা। আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগে এলাকার এক মহিলা স্বপ্নাদেশে কালো একটি পাথরের খণ্ড কুড়িয়ে পান। সেটিকে প্রথমে তিনি মাতৃরূপে পুজো করা শুরু করেন। সেভাবেই পুজোর চল হয়। পরে স্থানীয় জমিদার মুরারীমোহন চৌধুরী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে মামলায় জড়িয়ে পড়েন। মামলায় জয় পেতে তিনি বোল্লা কালীর কাছে মানত করেন। জয়লাভও করেন। সেই থেকেই বোল্লা কালীর পুজোর রমরমা। মুরারীমোহনের মামলায় জয়লাভের বছর থেকেই রাস পূর্ণিমার পরের শুক্রবার ঘটা করে পুজোর আয়োজন করা হয়। আয়োজকরা দাবি করেন, উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম মেলা হল বোল্লা মেলা। এবছর ৪ ডিসেম্বর, শুক্রবার পুজো অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু করোনার মধ্যে কীভাবে পুজো হবে এবং মেলা ও বলি আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে সকলে চিন্তিত। পুজোকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন লক্ষাধিক ভক্তের আগমন ঘটে মন্দিরে। প্রতি বছর হাজার পাঁচেক পাঁঠা বলি হয়। বিদেশ থেকেও ভক্তরা আসেন। প্রশাসন জানিয়েছে, কয়েক দিনের মধ্যেই বৈঠক করে এব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানান হবে। বালুরঘাট শহরের বাসিন্দা রাকেশ মহন্ত বলেন, বোল্লা কালীর পুজো, শুধু পুজো নয়, আমাদের কাছে আবেগ। পুজোর দিন মাকে দর্শন না করতে পারা আমাদের কাছে কষ্টের বিষয়। প্রশাসন এমন কিছু নিয়ম করুক, যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সব কিছু করতে পারি। নিজস্ব চিত্র