সংবাদদাতা, ইসলামপুর: শুক্রবার সকালে নবি দিবসের শোভাযাত্রায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর শিয়ালতোড় এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ইসলামপুরের মিলনপল্লি হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র তাহিল রেজা ছিল বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে। তার দুই বোন রয়েছে। বাবা হাফিজউদ্দিন কৃষিকাজ করেন। ছেলের মৃত্যুর খবরে উন্মাদের মতো অবস্থা হয়েছে তাঁর। কারও সঙ্গে কথা বলার মতন পরিস্থিতিতেই নেই। তাহিলের জ্যেঠু আমিরুদ্দিন বলেন, তাহিল পরিবারের সকলের খুবই আদরের ছিল। সে পড়াশোনায় খুব ভাল ছিল। আমরা এর আগেও বাইপাস কর্তৃপক্ষকে বহুবার বলেছি বিদ্যুতের তার সরিয়ে নিতে। কিন্তু তারা তাতে কর্ণপাত করেনি। তার যদি ওই তার সরিয়ে নিত, তা হলে এই দুর্ঘটনা ঘটত না। এদিকে আমিরুদ্দিনই আবার মৃত অঞ্জলি খাতুনের মেসো। তাঁদের বাড়িতেই বেড়াতে এসে প্রাণ গিয়েছে ১০ বছরের ফুটফুটে ওই মেয়েটির। আমিরুদ্দিন বলেন, কয়েকদিন আগেই অঞ্জলি আমাদের বাড়িতে এসেছিল। দু’একদিনের মধ্যেই নিজের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ এই দুর্ঘটনা তারও প্রাণ কেড়ে নিল। ছোট্ট মেয়েটা মেসোর বাড়িতে এসে মারা গেল, এই ক্ষত সারা জীবন আমাকে সহ্য করতে হবে।
মৃত মহম্মদ রাজাবের বাবা ও মা শোকে প্রায় অচৈতন্য হয়ে পড়েছেন। তার কাকা নাসিরুদ্দিন বলেন, দাদা দিনমজুরি করে সংসার চালায়। রাজাবরা তিন ভাই। সে ছিল মেজো। স্থানীয় স্কুলে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়াশোনা করত। জানা গিয়েছে, এদিন ওই শোভাযাত্রা বাইপাস দিয়ে যাওয়ার সময় সেখানে থাকা পিক আপ ভ্যানটি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যায়। ফলে ভ্যানে থাকা ও ভ্যানের আশেপাশে থাকা অনেকেই জখম হন। তাহিল রেজা, মহম্মদ রাজাব ও অঞ্জলি খাতুনের মৃত্যু হয়। তাদের বয়স ১০ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। মৃতদের মধ্যে দু’টি ছেলে শিয়ালতোড়েরই বাসিন্দা। অঞ্জলি কিষাণগঞ্জের বাসিন্দা। স্থানীয় বাসিন্দা জালালউদ্দিন বলেন, আমার ১৫ বছর বয়সী ছেলে মহম্মদ কাশিম শোভাযাত্রায় গিয়েছিল। দুর্ঘটনায় সে জখম হয়েছে। তাকে নার্সিংহোমে চিকিৎসা করানো হয়েছে।