নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: ভোটে হাঙ্গামা পাকানোর আশঙ্কা থাকা নন্দীগ্রামে সব দলের নেতা-কর্মীদের নোটিস পাঠাচ্ছে পুলিস। সিআরপিসির ১০৭ধারায় বাড়ি বাড়ি নোটিস পৌঁছে যাচ্ছে। ভোটে গণ্ডগোল পাকানোর আশঙ্কা থাকা নেতা-কর্মীদের নোটিস ইস্যু করা হচ্ছে। নোটিস হাতে নিয়ে তৃণমূল, বিজেপি এবং সিপিএম নেতা-কর্মীরা হলদিয়া কোর্টে জামিন নেওয়ার লাইন দিয়েছে। তাঁদের হাজার টাকা বন্ডে জামিন নিতে হচ্ছে। লোকসভা নির্বাচন ঘিরেও উত্তপ্ত হচ্ছে নন্দীগ্রাম। অতীতে ভোটে গোলমাল পাকানোর কেস হিস্ট্রি থাকা কোনও নেতাকে রেহাই দিতে চাইছে না কমিশন। তাই সতর্ক করে ওই ধারায় নোটিস ধরানো হচ্ছে।
নোটিস পেয়েছেন নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের আমদাবাদ-১ অঞ্চল কমিটির তৃণমূল নেতা প্রভাস ভুঁইয়া, দলের স্থানীয় প্রাক্তন বুথ সভাপতি শুভেন্দু মাইতি, দলের সমর্থক দেবব্রত মাইতি সহ আরও অনেকে। একইভাবে আমদাবাদের বিজেপি নেতা স্বরূপ দাস, দলের সক্রিয় কর্মী রবীন গায়েন, মিন্টু গায়েন সহ আরও অনেকের কাছে নোটিস পৌঁছেছে। স্বরূপ দাস নন্দীগ্রাম-৫ মণ্ডল কমিটির কিষাণ মোর্চার সভাপতি। আমদাবাদ-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সুভাষ প্রামাণিক, দুলাল দাস সহ অনেককে নোটিস ধরানো হয়েছে। এলাকার বেশ কয়েকজন সক্রিয় সিপিএম কর্মীর বাড়িতে নোটিস পৌঁছেছে।
গোটা নন্দীগ্রাম বিধানসভাজুড়ে এরকম নোটিস পাঠানো হচ্ছে। ভোটে গণ্ডগোল পাকাতে পারেন এরকম নেতা-কর্মীদের বেছে বেছে নোটিস ইস্যু করা হচ্ছে। মূলত অতীতে ভোটে গোলমালে জড়ানো কিংবা এলাকায় যে কোনও ঝামেলায় জড়িয়ে পড়া লোকজনকে চিহ্নিত করে ওই নোটিস দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে কোনও রাজনৈতিক রং ছাড়াই নোটিস পৌঁছে যাচ্ছে। আমদাবাদ-১ ও ২, বিরুলিয়া, বয়াল-১ ও ২, খোদামবাড়ি-১ ও ২ সহ বিভিন্ন জায়গায় নোটিস যাচ্ছে। ২০২১সালে বিধানসভা ভোটের সময় নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের বয়ালে ব্যাপক ঝামেলা হয়েছিল। লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষ্যে উত্তপ্ত হচ্ছে নন্দীগ্রাম। কয়েকদিন আগে ভেকুটিয়ায় তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যকে লক্ষ্য করে চোর স্লোগান ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। শুক্রবার পিংলার সভা থেকেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামের ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন। বিজেপি আবারও নন্দীগ্রামে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই সবদিক থেকেই সতর্ক নির্বাচন কমিশন। গোলমাল পাকানোর আশঙ্কা থাকা নেতা-কর্মীদের দল, রং বাছবিচার না করেই নোটিস পাঠিয়ে কোর্টে হাজিরা দিতে বলা হচ্ছে। এক হাজার টাকা বন্ডে জামিন নিতে হচ্ছে। এরঅর্থ ভোটে নিজেদের সংযত রাখবেন নোটিস প্রাপকরা।নোটিস পেয়ে চারদিন আগে হলদিয়া কোর্টে হাজিরা দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন বুথ সভাপতি শুভেন্দু মাইতি ও দলের কর্মী দেবব্রত মাইতি। শুভেন্দুবাবু বলেন, অতীতে আমরা কোনও গোলমালে জড়াইনি। আমদাবাদ গ্রামের চিত্তরঞ্জন পাত্র নামে একজনের অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের নোটিস ইস্যু করা হয়েছে। নোটিসে এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ, চিত্তরঞ্জনবাবু এরকম কোনও অভিযোগ করেননি বলে আমাদের জানিয়েছেন। আমরা কোর্টে হাজিরা দিয়েছি।
বিজেপি নেতা স্বরূপ দাস বলেন, আমাকে জোড়া নোটিস পাঠানো হয়েছে। ২৪এপ্রিল হলদিয়া কোর্টে হাজিরা দিয়েছি। আমাদের দলের বেশ কয়েকজনকে এরকম নোটিস দেওয়া হয়েছে। বেছে বেছে আমাদের পার্টির লোকজনকে এই নোটিস দেওয়া হয়েছে।