সব কর্মেই অর্থকড়ি উপার্জন বাড়বে। কর্মের পরিবেশে জটিলতা। মানসিক উত্তেজনা কমাতে চেষ্টা করুন। ... বিশদ
জনতা জনার্দ্দন থেকে বিজেপি কর্মীদের ক্ষোভ—এবার লোকসভায় কাশীপুরে অক্সিজেন পাচ্ছে তৃণমূল। এই বিধানসভা এলাকাতেই রয়েছে রেল শহর আদ্রা। এখানে পঞ্চায়েত ভোটের আগে খুন হয়েছেন তৃণমূল শহর সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবে। তাঁর অনুপস্থিতি বিজেপিকে খানিক সুবিধা দিলেও রেলের উচ্ছেদ নিয়ে সাধারণ মানুষের আতঙ্ক এবং রেলকর্মীদের নিউ পেনসেন স্কিম নিয়ে ক্ষোভ তাদের জয়ের আশায় জল ঢালতে পারে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
একদা কাশীপুর ছিল বামদুর্গ। সেখানে ছড়ি ঘোরাতেন দাপুটে সিপিএম নেতা বাসুদেব আচারিয়া। ২০১১ সালে বামেদের কাছ থেকে কাশীপুর ছিনিয়ে নেন তৃণমূল নেতা স্বপন বেলথোরিয়া। তার পর থেকেই এলাকায় কান পাতলে শোনা যায়, কাশীপুরের অলিখিত ‘শাসক’ বেলথোরিয়ারা। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আচারিয়াকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। নিরাপত্তার অভাববোধ করে রাতারাতি বাম কর্মীরা রামের শরণ নেন। ফলে, পরের দু’টি নির্বাচনে তৃণমূলকে টেক্কা দেয় বিজেপি। অনেকের মতে, এই টেক্কা অবশ্য সাংগঠনিক জোরে দিতে পারেনি বিজেপি। বিক্ষুব্ধ তৃণমূলর আর বাম থেকে রামে যাওয়া কর্মীরাই গেরুয়া শিবিরকে কাশীপুরে অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন। কিন্তু এমপি, এমএলএ পেয়েও কাশীপুরে সংগঠন গোছাতে ব্যর্থ হয় বিজেপি। ফলে, নিরাপত্তার প্রত্যাশায় যাঁরা পুরনো দল ছেড়েছিলেন, তাঁরা পাশে পাননি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে। এমনই অভিযোগ। এবার ভোটে সমীকরণ অনেকটাই বদলে গিয়েছে। কাশীপুরে ক্রমেই বামেদের ভিত শক্ত করছেন পুরনো কর্মীরা। অন্যদিকে, তৃণমূল সরকারের একাধিক সামাজিক সুরক্ষার প্রকল্প মানুষের মন জয় করেছে। বিশেষ করে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প ম্যাজিকের মতো কাজ করছে।
আদ্রা থেকে কাশীপুর যাওয়ার পথেই কথা হচ্ছিল ট্রেকার চালক পিণ্টু সেনগুপ্তের সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, ‘কোনও সমস্যা নিয়ে বিজেপি এমএলএকে ফোন করলে দেখছি বলেই ফোন কেটে দেন। কোনও কাজ হয় না। এখনও বেলথোরিয়াকে ফোন করলে কাজটা হয়ে যায়।’ কাশীপুরে বিদ্যুতের বিল দিয়ে ফেরার পথে শঙ্কর হাঁসদা বলছিলেন, ‘বিজেপি এমপি, এমএলএদের কোনওদিন এলাকায় দেখিনি। গন্ধেশ্বরী নদীর উপর সাঁকোটা ভেঙে গিয়েছে। কেউই নজর দেয়নি। দিদির জন্য স্ত্রী লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাচ্ছে।’ কৃষকবন্ধু প্রকল্পে নাম তোলাতে এসেছিলেন নির্মাল্য বেশড়া। আদর্শ আচরণবিধি লাগু থাকায় নাম এখন উঠবে না জেনে মন খারাপ তাঁর। নির্মাল্যর কথায়, ‘আমাদের গরিব এলাকা। সরকারি প্রকল্প ছাড়া আমাদের পেট ভরবে না।’ বৃদ্ধ শ্রীমন্ত কর্মকার কাশীপুর বাসস্ট্যাণ্ডের সামনে ব্যাঙ্কের গ্রহকসেবা কেন্দ্রে এসেছিলেন কৃষক বন্ধু প্রকল্পের টাকা ঢুকেছে কি না জানতে। তিনি বলেন, ‘এবার বেলথোরিয়াকে বলতে হবে, এখনও টাকা ঢোকেনি।’
কাশীপুর থেকে ফেরার পথে আদি তৃণমূল নেতা সহদেব হাঁসদা আক্ষেপ করে বলছিলেন. ‘কাশীপুরে সবকিছুই অনুকূলে। কিন্তু দলে সবাইকে গুরুত্ব দিতে হবে। তাহলেই ফল ভালো হবে।’ বিজেপি এমএলএল কমলাকান্ত হাঁসদা বলেন, ‘এমপিদের দিল্লি, এমএলএদের কলকাতায় অনেক সময় দিতে হয়। আমরা মানুষকে তা বোঝাচ্ছি। কর্মীদেরও এমপির অনুপস্থিতির কারণ বলছি।’ তাতে কোনও লাভ হবে না বলে দাবি তৃণমূল নেতা স্বপন বেলথোরিয়ার। তিনি বলেন, ‘কাশীপুরে আমাদের ভালো ফল হবে।’