সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় জটিলতা বৃদ্ধি। শরীর-স্বাস্থ্য দুর্বল হতে পারে। বিদ্যাশিক্ষায় বাধাবিঘ্ন। হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য আফশোস বাড়তে ... বিশদ
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে পুরুলিয়া শহর সহ জেলার অধিকাংশ এলাকার জনজীবন। পুরুলিয়া শহরের রেনি রোড এলাকায় ৬০-এ জাতীয় সড়কের বিস্তীর্ণ এলাকায় জল দাঁড়িয়ে যায়। শহরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের লোকনাথপল্লি এলাকাতেও বেশকিছু জায়গায় জল জমে যায়। বৃষ্টির জেরে বেশকিছু মাটি বাড়িও ভেঙেছে। কোটশিলা থানার ডুহুটাঁড় গ্রামে মাটির বাড়ি ভেঙে চারজন জখম হন। ওই পরিবারকে থানার পক্ষ থেকে সাহায্য করা হয়। বেশকিছু গ্রামীণ এলাকায় রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় যাতায়াতেও সমস্যা হয়েছে।
বাঁকুড়ায় গত ২৪ঘণ্টায় প্রায় ১৭০মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তার ফলে বাঁকুড়া পুরসভার ১১, ১২, ১৩, ১৬, ১৮ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার একাংশে বৃষ্টির জল দাঁড়িয়ে যায়। জল ঢুকে যায় অনেকের বাড়িতে। কিছু বাসিন্দাকে স্কুলে এনে রাখা হয়েছে। বাঁকুড়ার জুনবেদিয়া এলাকায় একটি পরিবারকে উদ্ধার করেন সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। বাঁকুড়া শহর লাগোয়া পঞ্চায়েত এলাকাতেও বৃষ্টির জল বাড়িতে ঢুকে যায়। বৃষ্টির জেরে জেলায় প্রায় ৩০টি মাটির বাড়ি ভেঙেছে। জুনবেদিয়ার মালঞ্চ এলাকার বাসিন্দারা খাল সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। বড়জোড়াতেও কয়েকটি পাড়ায় বাসিন্দাদের বাড়িতে জল ঢোকে। বাঁকুড়া পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য দিলীপ আগরওয়াল বলেন, কিছু বাসিন্দাকে সরানো হয়েছে। জলমগ্ন হলেও পরে পাম্প দিয়ে তা বের করে দেওয়া হয়।
গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টির ফলে বাঁকুড়ায় দ্বারকেশ্বর, গন্ধেশ্বরী, শিলাবতী প্রভৃতি নদীতে জলস্তর বেড়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, বাঁকুড়ায় অরেঞ্জ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আগামী দু’দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তবে প্রশাসন ইতিমধ্যেই কন্ট্রোল রুম খুলেছে। নিচু এলাকাগুলি প্রশাসনের কর্তারা পরিদর্শনও করেন। এরই মধ্যে সিমলাপালের ধুলাই গ্রামে শিলাবতী নদীতে এক ব্যক্তি তলিয়ে যান। এদিন তল্লাশি অভিযান চালানো হলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে খাতড়ার এসডিপিও কাশীনাথ মিস্ত্রি জানিয়েছেন। দ্বারকেশ্বরে জলের তোড়ে বিষ্ণুপুর ও জয়পুরে চারটি অস্থায়ী রাস্তা ও বাঁশের সাঁকো ভেসে গিয়েছে। বিষ্ণুপুরের প্রকাশঘাট ও জয়পুরের জুজুড় ঘাটে দু’টি অস্থায়ী রাস্তা ভেসে গিয়েছে। এছাড়াও বিষ্ণুপুরের দমদমা ও সুভাষপল্লি ঘাটে দু’টি বাঁশের সাঁকো ভেসে যায়। এতে দুই ব্লক এলাকা ছাড়াও পাত্রসায়র এলাকায় কয়েক হাজার বাসিন্দা যাতায়াতে সমস্যায় পড়েছেন। শালতোড়ায় দামোদরে থাকা ইশরডা ঘাটে বাঁশের সাঁকো ভেঙে গিয়েছে। তার ফলে বাঁকুড়ার সঙ্গে আসানসোলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
আরামবাগ পুরসভার ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের নিচু এলাকায় কিছু বাড়িতে জল ঢোকে। সেইসব বাসিন্দাদের ত্রাণ শিবিরে নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁদের খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়। খানাকুলে ইতিমধ্যে এনডিআরএফ টিম নামানো হয়েছে। আরামবাগের জন্য সিভিল ডিফেন্সের টিম মোতায়েন করা হয়েছে। পুরশুড়ায় রেসকিউ সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে ব্লক ও মহকুমা স্তরে কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে। প্লাবনের আশঙ্কায় মহকুমার প্রত্যেক নদীবাঁধে সুরক্ষার জন্য বালির বস্তা মজুত রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। আরামবাগের মহকুমা শাসক নৃপেন্দ্র সিংহ বলেন, ইতিমধ্যে মহকুমার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৩০০জন বাসিন্দাকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে আনা হয়েছে। গৃহপালিত পশুদেরও সরানো হয়েছে।