সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় জটিলতা বৃদ্ধি। শরীর-স্বাস্থ্য দুর্বল হতে পারে। বিদ্যাশিক্ষায় বাধাবিঘ্ন। হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য আফশোস বাড়তে ... বিশদ
প্রসঙ্গত, মালদহ জেলা পরিষদে ৩৭ জন সদস্য রয়েছেন। ২০১৮ সালে ২৯টি আসন জিতে প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদ দখল করে তৃণমূল। গৌরচন্দ্র মণ্ডল সভাধিপতি নির্বাচিত হন। এবারের বিধানসভা নির্বাচনের আগে আচমকা বেশ কয়েকজন পরিষদ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেন গৌরবাবু। বিজেপি তখন দাবি করেছিল, রাজ্যের মধ্যে প্রথম মালদহ জেলা পরিষদ তাদের দখলে চলে এসেছে। জেলা তৃণমূল অবশ্য বিষয়টি মানেনি। নির্বাচনে বিজেপির হয়ে ভোটে লড়াই করে হেরে যান গৌরবাবু। এরপর নির্বাচন মিটে যেতে এবং আত্মশাসন প্রক্রিয়া কিছুটা শিথিল হতেই এবার গৌরকে ‘সবক’ শেখানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দিল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার মৌসমের নেতৃত্বে ২৩ জন জেলা পরিষদ সদস্য একযোগে ডিভিশনাল কমিশনারের দপ্তরে গিয়ে অতিরিক্ত ডিভিশনাল কমিশনার দেবতোষ মণ্ডলের হাতে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন।
মৌসম বলেন, দলের টিকিটে নির্বাচিত হয়েও বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন গৌর। তিনি মানুষকে বিভ্রান্ত করতে দাবি করেছিলেন যে, তাঁর পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ নির্বাচিত সদস্যের সমর্থন রয়েছে। এদিন আমরা দেখিয়ে দিয়েছি দুই-তৃতীয়াংশ নির্বাচিত সদস্য তৃণমূলের পক্ষে রয়েছেন। বর্তমান সভাধিপতির অপসারণ এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। তিনি বলেন, বিজেপিতে যাওয়া কয়েকজন সদস্য নির্বাচনের আগেই ভুল বুঝে দলে ফিরেছিলেন। আরও কয়েকজন অনুশোচনা করে দলে ফিরে আসতে চাইছেন। বিজেপির একাধিক নির্বাচিত সদস্যও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। কিন্তু কাকে দলে ফেরানো হবে বা কাদের সমর্থন নেওয়া হবে তা রাজ্য নেতৃত্বের পরামর্শ ও নির্দেশ অনুযায়ী ঠিক করা হবে। আমরা চাই, যত দ্রুত সম্ভব আইন মেনে বর্তমান সভাধিপতিকে অপসারণ করা হোক। নতুন করে জেলা পরিষদের সভাধিপতি নির্বাচন করে জেলায় গ্রামীণ উন্নয়নের কাজে গতি আনা আমাদের লক্ষ্য।
একইসঙ্গে তিনি বলেন, অন্তত তিনজন কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধেও আমরা প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শুরু করব। তাঁরাও দলকে বিপদে ফেলেছিলেন। যাঁরা দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, তাঁদের সকলকেই এর মাশুল দিতে হবে।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌর মণ্ডল বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেছি। এই মুহূর্তে শুধু বলব, সময়ই কথা বলবে। তাঁর এই বক্তব্যে কিছুটা হলেও জল্পনা তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তবে কি পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলে রাখার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন সভাধিপতি?
আবার এদিন গৌরবাবু সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে থাকা তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের অনাস্থা সংক্রান্ত বৈঠক করোনা পরিস্থিতিতে স্থগিতের একটি চিঠি পেশ করেন। সে বিষয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তবে কি ক্ষমতা থেকে সরার বিষয়টি ধরে নিয়েই অনাস্থা বৈঠক পিছিয়ে দিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।
অতিরিক্ত ডিভিশনাল কমিশনার দেবতোষ মণ্ডল বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ ও আলোচনা সাপেক্ষে তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী আইন মেনে এই অনাস্থা প্রস্তাব সংক্রান্ত পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।