সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় জটিলতা বৃদ্ধি। শরীর-স্বাস্থ্য দুর্বল হতে পারে। বিদ্যাশিক্ষায় বাধাবিঘ্ন। হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য আফশোস বাড়তে ... বিশদ
জেলার বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তমোজিৎ চক্রবর্তী বলেন, বর্ষার শুরুতেই অজয় এবং দামোদর নদে জলের স্রোত যথেষ্ট বেশি। একাধিক অস্থায়ী সেতু ভেসে গিয়েছে। আমরা প্রতিটি পুরসভা ও ব্লককে সতর্ক করেছি। নদী তীরবর্তী এলাকায় নজরদারি রাখা হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সিভিল ডিফেন্সের জন্য বিশেষ মক ড্রিলের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
বাংলার বন্যা পরিস্থিতি অনেকটাই নির্ভর করে ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টিপাতের উপর। ওই রাজ্য থেকেই অজয়, দামোদর, ময়ূরাক্ষীর মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নদীনদী বাংলায় এসেছে। একইভাবে বন্যার ক্ষেত্রে বারবার সামনে এসেছে ডিভিসির ভূমিকা। শুরুতে যেভাবে বাংলা ও ঝাড়খণ্ডে প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে তাতে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের রাতের ঘুম উবেছে। যদিও এখনই আশঙ্কার কথা জানাচ্ছে না ডিভিসি। ডিভিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ডের প্রবল বর্ষণের জন্য শেষ ২৪ঘণ্টায় পাঞ্চেত ও মাইথন জলাধারের মোট ৪২ হাজার কিউসেক করে জল ঢুকছে। কিন্তু গ্রীষ্মকালে দু’টি জলাধারে জলস্তর যথেষ্ট নীচে থাকায় এখনই জল ছাড়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। তবে বৃষ্টিপাত ক্রমাগত চলতে থাকলে সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। শেষ ২৪ঘণ্টায় মাইথন জলাধারের জলস্তর প্রায় চার ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। মাইথন থেকে আট হাজার ও পাঞ্চেত থেকে মাত্র ন’হাজার কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে। পুরো পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
তবে শিল্পাঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের জেরে অজয় এবং দামোদরের জলস্তর যথেষ্ট বেড়েছে। বুধবারই অজয় নদের উপর জয়দেব শিবপুরের সংযোগকারী অস্থায়ী সেতু ভেঙেছিল। এদিন দামোদর নদের উপর বার্নপুর ও বাঁকুড়ার সংযোগকারী অস্থায়ী সেতু ভেসে গিয়েছে। এর পাশাপাশি আসানসোল-দুর্গাপুর, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়ার বেশ কিছু এলাকায় বৃষ্টিপাতের জেরে জল জমা শুরু হয়েছে। আসানসোলে ভগৎ সিং মোড়ের কাছে রেল ব্রিজের নীচে জল জমে। পাশাপাশি দিলদারনগর এলাকাতেও জল জমেছে। বরাকরের বিলিডাঙাল এলাকায় জল জমে। রানিগঞ্জ ব্লকের নূপুর গ্রামে দু’দিনের বর্ষাতেই বেশকিছু কৃষিজমি প্লাবিত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সেচ নালা পরিকল্পনামাফিক সংস্কার না হওয়ায় এই বিপত্তি। অন্যদিকে, জামুড়িয়ায় চিচুরিয়ায় এক ব্যক্তির গোয়ালঘর পড়ে ১২টি ছাগলের মৃত্যু হয়েছে।
দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। সেচদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত থেকে ২১হাজার ৪০০কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে। সেচদপ্তরের এক আধিকারিক জানান, দুর্গাপুর ব্যারেজে এই মুহূর্তে ২১হাজার ৯০০ কিউসেক করে জল ঢুকছে। তাই বর্ষার শুরুতে জলে টইটুম্বুর দুর্গাপুর ব্যারেজ। আজ শুক্রবার থেকেই মাইথনে সিভিল ডিফেন্সের মক ড্রিল শুরু হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে মানুষকে কীভাবে উদ্ধার করতে হবে তারই মহড়া চলবে এই ড্রিলে।