সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় জটিলতা বৃদ্ধি। শরীর-স্বাস্থ্য দুর্বল হতে পারে। বিদ্যাশিক্ষায় বাধাবিঘ্ন। হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য আফশোস বাড়তে ... বিশদ
তারকেশ্বরে শ্রাবণ ও চৈত্র মাসে মেলা হয়। প্রতি বছর এই সময় লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী ভিড় করেন মন্দিরে। মেলার সময় কয়েক হাজার ও অন্যান্য সময়ে কয়েকশো ব্যবসায়ীর রুজি-রোজগার এই পুণ্যার্থীদের উপরই নির্ভরশীল। কিন্তু গত বছর করোনার জন্য শ্রাবণ ও চৈত্র মাসের মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মন্দির কর্তৃপক্ষ। ব্যবসায়ীদের আশা ছিল, এই বছর স্বাভাবিক হবে জনজীবন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সেই আশায় ধাক্কা দিয়েছে। গত বছর থেকে দফায় দফায় বন্ধ হয়েছে তারকেশ্বর মন্দির।
এই অবস্থায় দিন গুজরান করতে নাভিশ্বাস উঠছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। তারকনাথের ভোগ বাতাসা, নকুলদানা, পেঁড়া তৈরি করার কারখানার মালিক ও কর্মচারীরা আজ কর্মহীন। পুণ্যার্থীরা তারকেশ্বরে এলে এখানকার জনপ্রিয় আঁচার কিনে বাড়ি নিয়ে যেতেন। এঁচোড়, চালতা, বাঁশ, তেঁতুল, পেঁপে, আম, লঙ্কা সহ হরেক রকমের আচার ছিল পুণ্যার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। এক সময় বিহারের সাহেবগঞ্জ থেকে আচার আসতো তারকেশ্বরে। বর্তমানে এলাকার দু’টি মেলাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ৬-৭টি আচার কারখানা। তারকেশ্বর ভঞ্জিপুরের বাসিন্দা তারক অধিকারী প্রায় ২০ বছর আচার তৈরির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে তাঁর কারখানা। খরচ সামাল দিতে শেষ হয়েছে ব্যবসার পুঁজি। সংসার চালাতে মুদিখানার দোকান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তারকবাবু বলেন, গত বছর দু’টি মেলাই বন্ধ ছিল। এই বছরও মেলা হওয়ার কোনও সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি না। ধীরে ধীরে ব্যবসা বন্ধের মুখে। মেলার সময় খুচরা বিক্রেতারা প্রায় কয়েক লক্ষ টাকার বেচাকেনা করেন। বর্তমানে আচারের কাঁচামাল- গুড়, সর্ষের তেল, সর্ষে, লঙ্কাগুঁড়ো, মেথিগুঁড়ো, মৌরি, ধনে, জিরের দামও বেড়েছে। এদিকে আচার তৈরি করে তা প্যাকেটজাত করে বাইরে বিক্রি করার মতো পরিকাঠামোও আমাদের নেই। সংসার চালাতে তাই বাধ্য হয়ে বিকল্প রোজগারের পরিকল্পনা করছি।
মন্দির ও মন্দির সংলগ্ন এলাকায় ব্যবসায়ী সহ সকলের দুর্দশার কথা তুলে ধরে তারকেশ্বর মন্দিরের পুরোহিত সন্দীপ চক্রবর্তী বলেন, এলাকার মানুষ খুবই সমস্যার মধ্যে রয়েছে। করোনার জন্য বারে বারে বন্ধ হয়েছে মন্দির, বাস, ট্রেন সহ গণপরিবহণ। স্বাভাবিক কবে হবে জানা নেই। যাঁদের রোজগার মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত, সেই প্রত্যেকটি পরিবারে বিষাদের সুর।