সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় জটিলতা বৃদ্ধি। শরীর-স্বাস্থ্য দুর্বল হতে পারে। বিদ্যাশিক্ষায় বাধাবিঘ্ন। হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য আফশোস বাড়তে ... বিশদ
বলা বাহুল্য, এই চারপেয়ে জীবের ‘করোনা’ সংক্রমণ আর মানুষের করোনা সংক্রমণ এক নয়। কুকুরদের ক্ষেত্রে এই টিকা ‘ক্যানাইন করোনা ভ্যাকসিন’ নামে পরিচিত। তবে সৌভাগ্যবান সারমেয়রা। একদা মহাভারতের কবির হাত ধরে তাদের পূর্বপুরুষ সশরীরে স্বর্গে যেতে পেরেছিল। আর বিজ্ঞানের অগ্রগতির হাত ধরে ঘুরে এসেছিল মহাকাশ থেকে। সেই সৌভাগ্যের ধারা এখনও বহমান। তাই যখন মানবসমাজ করোনার নামই প্রায় শোনেনি, তখন কুকুর-বিড়ালদের জন্য ওই ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু প্রাণী চিকিৎসক মহল বলছে, গত ১০ বছরে এনিয়ে কারওর তেমন আগ্রহ ছিল না। আর ২০২১ সালে এসে পোষ্যকে ভ্যাকসিন দেওয়ার আগ্রহ ইচ্ছা বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে মানুষের। ক্লিনিকে ভিড় সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।
কেন এত আগ্রহ পোষ্যের মালিকদের? চিকিৎসক মহলের দাবি, মানব সমাজের করোনা ভীতি এর মূল কারণ। বিশেষ করে মানব শরীরের করোনায় সিংহ ও পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন পোষ্যের আক্রান্ত হওয়ার সংবাদে মালিক মহলে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। আবার, বিশ্বজুড়ে আতঙ্কের জন্ম দেওয়া কোভিড-১৯ ঠিক কী ভাবে ছড়িয়ে পড়ল, সেই রহস্য এখনও অজ্ঞাত থাকায় ‘করোনা’ নামেই ভীতির সঞ্চার হচ্ছে। রাজ্যের প্রবীণ প্রাণী চিকিৎসক তথা প্রোগ্রেসিভ ভেটেরেনারি ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি জয়জিৎ মিত্র বলেন, ক্যানাইন করোনা ভ্যাকসিন আমাদের কাছে বহু বছর আগে এসেছে। ২০২০ সালেও একটি বা দু’টি ক্ষেত্রে পোষ্যকে ওই ভ্যাকিসন দিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন মালিকরা। সেখানে চলতি বছরের গোড়া থেকে এখনও পর্যন্ত আগ্রহীদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আবার পথ-কুকুরদের জন্য এই উদ্যোগ নেওয়ার কেউ নেই। একারণে পোষ্য ও পথ-কুকুর, উভয়কেই ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হচ্ছে। ৪ জুলাই থেকে দফায় দফায় গোটা রাজ্যে এই কাজ করা হবে।
মানুষ ও কুকুর-বিড়ালের করোনা ভাইরাস পৃথক হলেও দু’টিই ফুসফুসে বা শ্বাসতন্ত্রে সমস্যা তৈরি করে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কুকুরের করোনা ভাইরাস মূলত দু’রকমের। একটির নাম আলফা করোনা ভাইরাস বা সিসিওভি, অন্যটি বিটা করোনা ভাইরাস বা সিআরসিওভি। প্রথমটিতে পেটের সমস্যা, জ্বরের লক্ষণ দেখা যায়। আর দ্বিতীয়টি শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা তৈরি করে। তবে এই দু’টির কোনওটিই পোষ্য থেকে মানুষের মধ্যে ছড়ায় না। কিন্তু অশ্বত্থামা যতই হাতির নাম হোক, মহাভারতে তা দ্রোণবধের কারণ হয়েছিল। সেই ধারাতেই কুকুর-বিড়ালের ‘করোনা’ ভ্যাকসিনের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে।