সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় জটিলতা বৃদ্ধি। শরীর-স্বাস্থ্য দুর্বল হতে পারে। বিদ্যাশিক্ষায় বাধাবিঘ্ন। হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য আফশোস বাড়তে ... বিশদ
ময়নাগুড়ির ঘটনায় নির্যাতিতার স্বামী এদিন বলেন, আমার স্ত্রীকে অন্যায়ভাবে গ্রামেরই কিছু লোক মেরেছে। ওর চুল কেটে দিয়েছে। আমি এর বিচার চাইছি। নির্যাতিতা এদিন বলেন, বাড়িতে এক দাদা আমার মেয়েকে প্রাইভেট টিউশন পড়াতে এসেছিল। ওই দাদাকে ঘিরেই কয়েকজন গ্রামবাসীর সন্দেহ হয়। ওরা মিথ্যে অভিযোগে আমার উপর চড়াও হয়। ওরা আমার মাথার চুল কেটে দিয়েছে, মারধর করেছে। আমি বিচার চাই।
জলপাইগুড়ির পুলিস সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, ময়নাগুড়ি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। এখনও পর্যন্ত তিনজন পুরুষ এবং চারজন মহিলাকে ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে আরও চারজনের নাম রয়েছে। তাদের খোঁজ চলছে। এলাকায় পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে।
আমগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দিলীপ রায় বলেন, মহিলার ছবি ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় মোবাইলে বর্বরোচিত ওই ঘটনা দেখেছি। ওই মহিলার উপর পৈশাচিক অত্যাচার হয়েছে। এতজন মিলে একজনের উপর অত্যাচার করল অথচ শ’য়ে শ’য়ে লোক দাঁড়িয়ে থেকেও প্রতিবাদ করতে এগিয়ে এল না, এটা সভ্য সমাজে মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের সবাইকে পুলিস খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করুক, এই দাবি করছি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়নাগুড়ি ব্লকের আমগুড়িতে গত মঙ্গলবার এলাকার এক মহিলার বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ তোলে গ্রামবাসীদের একাংশ। ওই মহিলা সহ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রামবাসীরা বাড়িতে একসঙ্গে দেখে তাদের আটকে রাখে। এ নিয়ে ওই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। গ্রামবাসীরাই ময়নাগুড়ি থানার খবর দিলে পুলিস আসে। রাতে পুলিস ওই মহিলা এবং ওই ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে যায়। পরে ঘটনার খবর পেয়ে মহিলার স্বামী থানায় পৌঁছন এবং তিনি স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিসের কাজে আর্জি জানান। পরে পুলিস মহিলা এবং ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেয়। স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর স্বামী সোজা শ্বশুরবাড়ি চলে যান। বুধবার ওই দম্পতি আমগুড়িতে নিজের বাড়িতে ফেরেন। অভিযোগ, এর পরই গ্রামের কিছু মহিলা ও পুরুষ দা, কাঁচি, লাঠিসোটা নিয়ে তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয়। মহিলাকে টেনেহিঁচড়ে বাড়ি থেকে বের করে রাস্তায় নিয়ে এসে তাঁকে মারধর করা হয়। তাঁদের বাড়িতে ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট চালানো হয় বলেও অভিযোগ। কয়েকজন ওই মহিলার চুল কেটে দেয়। নিগৃহীতার স্বামী এদিন অভিযোগপত্রে লেখেন, স্ত্রীকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধরের পর কিছু গ্রামবাসী ওর চুল কেটে দিয়েছে। ঘটনাস্থলে থাকা কয়েকজন মোবাইলে সেই ছবি তুলে ভাইরাল করে দেয়। মারধরের ওই ঘটনার পর নির্যাতিতা মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদিন তাঁরা ১১ জনের নামে ময়নাগুড়ি থানায় এফআইআর করেন। পুলিস সাতজনকে এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের খোঁজে বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চলছে বলে ময়নাগুড়ি থানার আইসি ভূষণ ছেত্রী জানিয়েছেন।