বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
ধনঞ্জয়বাবু বলেন, ঘরের ট্রাক্টর বিক্রি করে সংগঠনের জন্য খরচ করেছি। দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছি। চাকরির জমানো টাকা খরচ করে ভোটের অনেক আগে মিটিং-মিছিল করেছি। ভেবেছিলাম দলটা রাজ্যের ক্ষমতায় এলে সুদিন আসবে। কিন্তু নির্বাচনের আগে হঠাৎ করে দেখলাম রাজ্যের নেতারা পুরনোদের বাদ দিয়ে নতুনদের নিয়ে মাতামাতি শুরু করল। তারাই সর্বেসর্বা হয়ে উঠল। পুরনো নেতাদের গুরুত্বই ছিল না। তাঁরা নীরবে চোখের জল ফেলেছেন। তার ফল দলকে ভোগ করতে হচ্ছে। অনেক ব্যথা বুকে নিয়ে দলের স্বার্থেই বীরভূম, বর্ধমানে এবারও প্রচারে গিয়েছি। আমার নিজের এলাকা কান্দিতেও প্রচার করেছি। কিন্তু প্রথম থেকেই মনে হচ্ছিল দল যা করছে তা ঠিক নয়।
তিনি আরও বলেন, ভোটের ফল বেরনোর পর রাজ্য নেতাদের একাধিকবার ফোন করেছি। কেউ ফোন তোলেনি। আমাদের মতো পুরনো নেতাদের সমস্যার কথা জানিয়ে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকেও মেসেজ করেছি। তাঁর কাছ থেকেও কোনও উত্তর পাইনি। পুরনোদের সরিয়ে নব্যদের গুরুত্ব দিলে আগামী দিনেও দলকে খেসারত দিতে হবে।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারের নির্বাচনে ধনঞ্জয়বাবুর মতো আরও অনেককেই সামনে আনা হয়নি। তাঁদের অনেকেই টিকিট পাওয়ার দাবিদার ছিলেন। কিন্তু তাঁদের বাদ দিয়ে তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের প্রার্থী করা হয়েছিল। ধনঞ্জয়বাবুর বাড়ি কান্দি বিধানসভা কেন্দ্রে। দলের অনেকেই জানতেন এবার তিনি ওই কেন্দ্রে প্রার্থী হতে পারেন। কিন্তু ভোট ঘোষণা হওয়ার পর এক তৃণমূল নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়ে প্রার্থী হয়ে যান। তারপর থেকেই পুরনো নেতারা ক্ষোভে ফুঁসতে থাকেন। অনেক কর্মী সক্রিয়ভাবে দলের হয়ে কাজ করেননি। টিকিট বণ্টন নিয়ে অন্যান্য জায়গার মতো মুর্শিদাবাদ জেলাতেও গেরুয়া শিবিরে বিভাজন তৈরি হয়েছিল। জেলায় নিজেদের মধ্যে কোন্দল অনেক আগে থেকেই ছিল, কিন্তু প্রার্থী ঘোষণার পর দ্বন্দ্ব আরও বেড়ে যায়।
ধনঞ্জয়বাবু বলেন, দলের ক্ষতি হবে বলে ভোটের সময় মুখ খুলিনি। কিন্তু এখন মনে হয়েছে এর প্রতিবাদ হওয়া দরকার। তা না হলে দল আগামী দিনেও আবার ভুল করবে। এটা আমার মতোই অনেক প্রবীণ নেতাদের বক্তব্য। বিভিন্ন জেলার পুরনো নেতারা ফোন করে তাঁদের ক্ষোভের কথা বলছেন। অনেকে ভয়ে রাজ্য নেতাদের কিছু জানাতে পারছেন না। কেউ মুখ খুললেই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আমি ওসবে ভয় পাই না। পুরনো বিজেপি নেতারা দুর্দিনেও দল ছেড়ে যাবেন না। কিন্তু নব্যরা সুযোগসন্ধানী। এটা রাজ্য নেতাদের বোঝা উচিত। ওদের মনোভাব না বদল হলে দলের উন্নতি হবে না। বিজেপির জেলা নেতারা এব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে দলের জেলার এক নেতা বলেন, ব্যক্তিগতভাবে কারও মান-অভিমান থাকতে পারে। দল বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভাবে। সেটা সবারই মেনে নেওয়া উচিত। নিজেদের ইচ্ছেমতো সবকিছু পাওয়া যায় না।