সংবাদদাতা, বহরমপুর: গরম বাড়তেই বেলডাঙা ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। চৈতন্যপুর-১, চৈতন্যপুর-২, মাড্ডা পঞ্চায়েত এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা প্রকট হয়ে উঠেছে। এইসব পঞ্চায়েত এলাকায় এখনও ঘর ঘর জল প্রকল্প চালু হয়নি। অধিকাংশ গ্রামে টিউবওয়েল অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। কোনও কোনও গ্রাম একটিমাত্র টিউবওয়েলের উপর নির্ভর করেই রয়েছে। গ্রামের মানুষকে জল কিনে খেতে হচ্ছে। যাঁদের সামর্থ্য নেই, তাঁরা সেচের সাবমার্সিবল থেকে জল আনছেন। বহু পরিবারকে পানীয় জলের জন্য প্রতিবেশীর উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে শুকিয়ে যাওয়া জলাশয়ে টিউবওয়েল বসিয়ে পানীয় জল নিচ্ছেন। যদিও গভীর নলকূপ না হওয়ায় এই জল অস্বাস্থ্যকর বলেই গ্রামবাসীদের দাবি। লোকসভা নির্বাচনের আগে পানীয় জলের সমস্যায় ক্ষোভে ফুঁসছেন বাসিন্দারা। বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষোভ সব থেকে বেশি। লোকসভা নির্বাচনে বেলডাঙায় পানীয় জল সমস্যা অন্যতম ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা ভোট চাইতে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়তে পারেন বলেই বিভিন্ন গ্রাম থেকে তার আভাস মিলেছে। বৈশাখের শুরুতেই তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। প্রতিদিন তাপমাত্রার পারদ উপরে উঠছে। কাঠফাটা রোদে শুকিয়ে গিয়েছে বহু নদী, নালা, জলাশয়। পুকুরগুলি শুকিয়ে যাওয়ায় পানীয় জলের পাশাপাশি স্নানের ও সেচের জলেরও তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বেলডাঙা-১ ব্লকের ভাদুর, দলুয়া, আলিনগর, চৈতন্যপুর, মাড্ডা এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট সব থেকে বেশি সামনে এসেছে। তাই নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ। নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে ক্ষোভ ততই আছড়ে পড়বে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পানীয় জলের সমস্যা দীর্ঘদিনের। কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েত বা ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ঘর ঘর জল প্রকল্পে পাইপ বসানো হয়েছে। কিন্তু জল আসে না। গরম বাড়তেই জলের চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সমস্যা বেড়েছে।
ভাদুর গ্রামের বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল বলেন, পানীয় জলের সমস্যায় এখানকার মানুষ কীভাবে দিন কাটাচ্ছেন, সেটা আমরাই জানি। দূর থেকে কাউকে বোঝানো যাবে না। এই গরমেও মেপে জল খেতে হয়। স্থানীয় প্রশাসনের অনেক আগেই এই সমস্যার দিকে নজর দেওয়া উচিত ছিল।
জলের সমস্যায় এবার বেলডাঙায় নির্বাচনী ইস্যু হয়ে সামনে এসেছে। বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ ক্ষোভের আঁচে ফুঁসছে। টিউবওয়েলে জলের লাইনে দাঁড়িয়ে মহিলারা ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। টিউবওয়েলের লাইনে দাঁড়িয়ে আদুরি মণ্ডল বলেন, আমাদের কষ্ট কেউ দেখেন না। ভোটবাবুরা ভোট চাইতে এসে আশ্বাসের বন্যা বইয়ে দেন। ভোট মিটলেই আমাদের দিকে ফিরেও তাকান না। শম্পা মণ্ডল বলেন, ভোট চাইতে গ্রামে এলেই রাজনৈতিক নেতাদের সামনে সমস্যার কথা তুলে ধরব। তাঁদের জবাব শুনেই সিদ্ধান্ত নেব। পাশাপাশি ক্ষোভে ফুঁসছেন কয়েকশো মহিলা।
সেই ক্ষোভের আঁচ প্রচারে এসে রাজনৈতিক নেতারা কীভাবে সামলান, প্রাথমিকভাবে সেটাই দেখার।