সংবাদদাতা, করিমপুর: রবিবার বিকেলে রাজনৈতিক দলের প্রচার শেষ হল। মঙ্গলবার তৃতীয় দফায় মুর্শিদাবাদ লোকসভার অন্তর্গত নদীয়া জেলার একমাত্র করিমপুর বিধানসভা এলাকায় ভোট রয়েছে। এই ভোট অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ করতে সমস্ত রকম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। করিমপুর বিধানসভার নদীয়া জেলার একেবারে উত্তরে অবস্থিত। এই বিধানসভার একদিকে যেমন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত, অন্যদিকে রয়েছে মুশিদাবাদ জেলা সীমান্ত। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় বাড়তি নজরদারির পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী মুর্শিদাবাদ জেলার ডোমকল থানা উত্তেজনাপ্রবণ হওয়ায় বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনী প্রক্রিয়া চালু হয়ে যাওয়ার পর থেকেই সীমান্তবর্তী করিমপুর এলাকায় চারটি থানার বিশেষ বিশেষ জায়গায় নাকা চেকিং পয়েন্ট করে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। করিমপুর থানার নতিডাঙা মোড়, হোগলবেড়িয়া থানার গোপালপুরঘাট, মুরুটিয়া থানার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তমুখী ডাক্তারখানা মোড় এছাড়াও থানারপাড়া থানার ফাজিলনগর, বোয়ালমারী ও পণ্ডিতপুর ঘাটে নাকা চেকিং চলবে। এবারের নির্বাচনের দিন প্রতি বুথে চারজন করে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং একজন পুলিস পাহারায় থাকবেন। প্রতি থানা এলাকায় তিন কোম্পানি করে মোট বারো কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। পুলিস ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, করিমপুর, থানারপাড়া, মুরুটিয়া ও হোগলবেড়িয়া এই চারটি থানা এলাকার মোট ১৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে মোট বুথের সংখ্যা ২৬১টি। এর মধ্যে করিমপুর ১ ব্লকের আটটি পঞ্চায়েত এলাকায় ১৫৫টি এবং করিমপুর ২ ব্লকের ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০৮টি বুথ রয়েছে। করিমপুর বিধানসভা এলাকার মোট ২ লক্ষ ৫৪ হাজার ২৩০ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ১ লক্ষ ৩০ হাজার ০৮৪ জন, মহিলা ১ লক্ষ ২৪ হাজার ১৪২ জন, তৃতীয় লিঙ্গের ৪ জন রয়েছেন। একমাত্র চরমেঘনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটগ্রহণ কেন্দ্র সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার ওপাশে রয়েছে।
বিজেপির মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি সুরজিৎ জোয়ারদার জানান, ২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রের বহু বুথে মানুষ ভোট দিতে পারেননি। এবার যাতে অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়, তার জন্য পুলিস প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। একই অভিযোগ করেন ভারতের গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের নদীয়া জেলা সভাপতি ও সিপিএমের নদীয়া জেলা কমিটির সদস্য নাদির হোসেন মণ্ডল। তিনি জানান, আগের নির্বাচনে যেখানে অশান্তি হয়েছিল, সেইসব জায়গা চিহ্নিত করে বাড়তি নজরদারি করুক পুলিস। নির্বাচন কমিশনের কাছে সকলের আবেদন, ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে বুথ পর্যন্ত গিয়ে নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হবে।
করিমপুর ১ ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি সৌমিক সরকার বলেন, আমরাও চাই অবাধ ও সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট হোক। তেহট্টের এসডিপিও শুভতোষ সরকার জানান, ভোটের নিরাপত্তায় নির্বাচনী এলাকায় ১২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়াও ১৩ জন ইনসপেক্টর, ১০৮ জন এসআই, এএসআই এবং ৭৫৪ জন পুলিস কনস্টেবল বা হোমগার্ড থাকবেন।