বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
মেলা কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা রিয়াজ মণ্ডল বলেন, এবার মেলায় প্রায় ২৫০টি দোকান বসেছে। বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিস, সিভিক ভলান্টিয়ার ছাড়াও মেলা কমিটির ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন। সকাল ৯টা থেকে এই মেলায় মানুষের আনাগোনা শুরু হয়। রাত ৮টা পর্যন্ত তা চলে। মাঘীমেলার অন্যতম আকর্ষণ শাঁকালু। লরি লরি শাঁকালু আসে এই মেলায়। সেই শাঁকালুর টানেই মেলায় ভিড় জমান আশপাশের গ্রামের মানুষ। কেজি কেজি শাঁকালু কিনে নিয়ে যান তাঁরা। অনেকে পেট ভরে শাঁকালু খেয়ে বাড়ি ফেরেন। যদিও এবছর ফলন কম হওয়ায় মেলায় শাঁকালু কম ছিল। দামও ছিল তুলনামূলকভাবে বেশি। পাত্রসায়রের বাসিন্দা শাঁকালু ব্যবসায়ী বিরু দাস বলেন, করোনার কারণে এবছর শাঁকালু চাষ কম হয়েছে। তাই মেলায় এবার শাঁকালু কম এসেছে। অন্যান্যবার ২০ টাকা কেজি শাঁকালু বিক্রি করি। এবার তা ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।
শাঁকালু ছাড়াও প্রাচীন গ্রামীণ মেলার যাবতীয় আকর্ষণ এখানে মজুত ছিল। ঘুড়ি ওড়ানো তো রয়েছেই। আছে মুরগি লড়াই, পুতুল নাচ, বাদাম ভাজা, পাঁপড়, নাগরদোলা সহ সবই। ভিড়ের কারণে সদরঘাটে কৃষক সেতুতে বাস ও অন্যান্য যান চলাচল এদিন নিয়ন্ত্রণ করে পুলিস। একদিনের মেলায় চোখে পড়ার মতো ভিড় ছিল স্টেশনারি দোকানগুলিতে। ব্যবসায়ী রণজিৎ বাছাড় বা বালু সাউ বলেন, গত ৯-১০ বছর ধরে আমরা এখানে আসছি। প্রতিবারের মতো এবারও ভালো বিক্রি হয়েছে।
জানা গিয়েছে, প্রায় তিনশো বছর আগে পৌষ সংক্রান্তিতে দামোদরের তীরে কাঞ্চননগরের কাঠগোলা ঘাটে এই মেলা হতো। তখন মূল আকর্ষণ ছিল ময়ূরপঙ্খী নাচ। গোরুর গাড়িকে ময়ূরের মতো সাজিয়ে তাতে রাধা-কৃষ্ণকে বসানো হতো। সবচেয়ে সুন্দর ময়ূরপঙ্খীকে পুরস্কৃত করতেন রাজা। পরে কাঞ্চননগর থেকে রাজবাড়ি বর্ধমান শহরে সরে এলে ময়ূরপঙ্খী মেলা সদরঘাটে সরে যায়। পঞ্চাশ বছর আগে সেই ময়ূরপঙ্খী নাচ বন্ধ হয়ে যায়। তার বদলে পৌষ সংক্রান্তির পরদিন সদরঘাটে ঘুড়ির মেলা হয়। দামোদরের বালির চরে ঘুড়ি ওড়ানো চলে। ছোটবেলার হারিয়ে যাওয়া টুকরো টুকরো স্মৃতি ফিরে পেতে এদিন অনেকেই মেলায় ভিড় জমিয়েছিলেন। প্রাণভরে তাঁরা আনন্দ উপভোগ করেছেন।