পারিবারিক সম্পত্তি বিভাজনে আইনি চাপ বাড়তে পারে। কাজকর্মে যোগাযোগের অভাবে বিঘ্ন। ... বিশদ
২০১৯ সালের লোকসভার নির্বাচনে শান্তিপুর বিধানসভা থেকে ৩৫ হাজার ভোটে লিড পেয়েছিলেন বিজেপির জগন্নাথ সরকার। এরপর একুশের বিধানসভা নির্বাচনে শান্তিপুর বিধানসভা কেন্দ্রেই ফের প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে ১৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে জেতেন। হারতে হয়েছিল তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক অজয় দেকে। জগন্নাথ সরকার পুনরায় সাংসদ পদ গ্রহণ করায় শান্তিপুরে উপনির্বাচন করতে হয়। পরপর দু’টি নির্বাচনে বিরাট ব্যবধানে হারার পর এই কেন্দ্রে তৃণমূলের জয় ফিরিয়ে আনা সহজ ছিল না। রাজনৈতিক মহল বলছে, সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক পরিবার থেকে ব্রজকিশোর গোস্বামীকে প্রার্থী করে সে সময় মাস্টার স্ট্রোক দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। শান্তিপুরের অদ্বৈত পাটের অন্যতম সেবায়েত তরুণ মুখ ব্রজকিশোর ৬৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজেপির নিরঞ্জন বিশ্বাসকে হারিয়ে তৃণমূলের গড় রক্ষা করেন। উপনির্বাচনে এই জয়ের পিছনে শান্তিপুরের বৈষ্ণবদের ভূমিপুত্র হিসেবে ব্রজকিশোরের পরিচয়ও অন্যতম ফ্যাক্টর ছিল বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। এবার রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্র দখলের ক্ষেত্রেও এই একই পন্থা নিতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলকে। সম্পূর্ণ ভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে মুকুটমণিকে নিয়ে এসে প্রার্থী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি পারিবারিকভাবে মতুয়া প্রভাব এবং মতুয়া সমাজের ভূমিপুত্র হিসেবে মুকুটমণির ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তিপুর উপনির্বাচনের প্রচারে সীমিত সময়ে যেভাবে নতুন মুখের প্রার্থীকে মানুষের কাছে পরিচিত করানো হয়েছিল, সেই একই স্ট্রাটেজি এবারের লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও অনুসরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুপ্রিম সিদ্ধান্তের ওপর মানুষও ভরসা রাখবেন বলে আশাবাদী দল। শান্তিপুরের বিধায়ক তৃণমূলের ব্রজকিশোর গোস্বামী বলেন, যে বিরাট ব্যবধানে আমি জয় পেয়েছিলাম, পরবর্তীতে কাজের মাধ্যমে সেটা মানুষের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। বিধায়ক হওয়ার পর পুরসভা, পঞ্চায়েত ও এবারের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নেমেছি। আমার মতো মুকুটমণির উপরেও ভরসা রাখবেন মানুষ। রানাঘাট কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভার মধ্যে শান্তিপুরই রেকর্ড সংখ্যায় লিড দেবে বলে শুক্রবার আত্মবিশ্বাসের সুরে জানিয়েছেন বিধায়ক।
অন্যদিকে লিড পাওয়া তো দূরের কথা, এবারের লোকসভায় বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফলে শান্তিপুর নিয়ে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তায় ভুগছেন বিজেপি কর্মীদের একাংশ। বিজেপির নিচুতলার কর্মীদের অনেকেই বলছেন, জগন্নাথ সরকারের নিজের গড় হওয়া সত্ত্বেও শান্তিপুরে দলের অন্দরে ভাঙন আটকাতে পারেননি তিনি। সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশ তো বটেই, কর্মীদেরও অনেকেই আমাদের প্রার্থীকে নিয়ে চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ। গত ৫ বছরে গ্রামে গঞ্জে সাংসদের দেখা না পাওয়া নিয়েও প্রচার পর্বে রীতিমতো প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে আমাদের। যদিও ঘরে-বাইরের এসব অভিযোগ মানতে নারাজ বিজেপি প্রার্থী। জগন্নাথ সরকার বলেন, শান্তিপুর তো আমার নিজের বাড়ি। এখানকার মানুষ বরাবর আমায় দু’হাত ভরে আশীর্বাদ করেছেন। এবারও তাই করবেন।