বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
জানা গিয়েছে, ১২বছর ধরে তিনি আসানসোল জেলা হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। প্যারাটিচার স্ত্রী একমাত্র ছেলেকে নিয়ে বর্ধমান শহরে থাকতেন। যাতে হাসপাতালের প্রয়োজনে তৎক্ষণাৎ হাজির হতে পারেন তার জন্য কাছেই একটি ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন বৃন্দাবনবাবু। মাঝে মধ্যে বর্ধমানে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতেন। কিন্তু মহামারীর প্রকোপ শুরু হতেই একেবারে সামনের সারিতে থেকে করোনা যুদ্ধে শামিল হন তিনি। আসানসোল জেলা হাসপাতালই হোক বা সারি হাসপাতাল, একের পর এক সন্দেহভাজনের দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন তিনি। এমনকী বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানায় গিয়েও নমুনা সংগ্রহ করতে পিছুপা হননি। নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের বড় ভরসা হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
এদিকে মাসের পর মাস বাড়ি না ফেরায় বারবার মা, স্ত্রী তাঁকে আসার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করেছেন রোগীদের স্বার্থে। অবশেষে তিনমাস পর ২৬ জুন একমাত্র ছেলে সঞ্চয়ন মণ্ডলের জন্মদিনে বাড়ি আসার সিদ্ধান্ত নেন। তার আগে ২৫ জুন আসানসোল জেলা হাসপাতালের ট্রুনাটে পরীক্ষা করাতে গিয়ে তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ মেলে। তাঁকে প্রথমে দুর্গাপুরের করোনা হাসপাতালে, পরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। তবে, করোনার পাশাপাশি তাঁর বেশি মাত্রায় সুগার থাকার জন্য এই অকাল পরিণতি বলে চিকিৎসকদের দাবি। ঘটনার পরেই শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে জেলার স্বাস্থ্যমহল। সহকর্মীকে হারিয়ে করোনা যুদ্ধে তাঁরা যেন পরাজিত। রোগী ও হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত সকলের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন বৃন্দাবনবাবু। তাই সোশ্যাল মিডিয়াতেও অনেকে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানান। অন্যদিকে, বর্ধমানের বাড়িতে কেঁদেই চলেছেন স্ত্রী সুমনা মণ্ডল। মাহিনগরে গ্রামের বাড়িতে মা কল্পনা মণ্ডল কথা বলার অবস্থায় নেই।
জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন, আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হল। চিকিৎসক রূপক চট্টোপাধ্যায়, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।