সংবাদদাতা, লালবাগ ও জঙ্গিপুর: সুপার সাইক্লোন উম-পুনের তাণ্ডবের এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবার বিকেলে মিনিট পাঁচেকের ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল ফরাক্কার বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাগদাবড়া ফরেস্ট। ফরেস্টের সাতশোর বেশি গাছ ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে বলে বনবিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে। ঝড়ের দাপটে ব্লকের উপর চাদর, নীচের চাদর, ধুলাওয়াড়ি, বাহাদুরপুর সহ কয়েকটি গ্রামের বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন গাছ সহ আমবাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের দাপটে বেশ কয়েক জায়গার বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে এবং পড়ে যাওয়ায় গ্রামগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবের পর দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে বাগদাবড়া, চাদর, বাহাদুরপুর প্রভৃতি গ্রামের বাসিন্দাদের। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিস একজোট হয়ে কাজ করছে। বিদ্যুৎদপ্তরের কর্মীরা বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। বুধবার এলাকায় যান স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের আধিকারিকরা। ফরাক্কার বিডিও রাজর্ষি চক্রবর্তী বলেন, ফরেস্টের প্রচুর গাছের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফরেস্ট সংলগ্ন গ্রামগুলির বেশ কিছু বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমে বেশ কিছু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বাকি পরিবারগুলির কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে মিনিট পাঁচেকের ঝড় বেশ কয়েকটি গ্রাম তছনছ করে দেয়। বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। ক্ষতিপূরণের দাবিতে এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা চালুর দাবিতে সরব হয়েছেন বিধ্বস্ত এলাকার বাসিন্দারা। বাগদাবড়া গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, বিকেল সাড়ে চারটের পর হঠাৎ হাওয়া বইতে শুরু করে। কিছু বোঝার আগেই ঘণ্টায় ১০০কিলোমিটার বেশি গতিতে ঝড় শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে অনেক বাড়িঘর, বড় বড় গাছ ভেঙে পড়ে। বাগদাবড়া ফরেস্টের এক আধিকারিক বলেন, মিনিট চার-পাঁচেকের ঝড়ে সাতশোর বেশি গাছ পড়ে গিয়েছে। ফরাক্কা পুলিস-প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাছগুলি সরাতে সাহায্য করেছে। ফরাক্কা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি এজারত আলি বলেন, ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এলাকার মানুষ কৃষিকাজ ও আমের মরশুমের উপর নির্ভর করেন। ঝড়ে আমের বিরাট ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে ক্ষতিপূরণ পান তার জন্য স্থানীয় ও জেলা প্রশাসনকে বলব।