বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
সাহেবনগরে রাস্তার পাশে ছোট একটা টালির বাড়ি। সেখানেই থাকতেন সালাউদ্দিন। প্রতিদিন সকাল হলেই তিনি বাবার সঙ্গে বাজারে সব্জি বিক্রি করতে চলে যান। সেখান থেকে যে সামান্য টাকা আয় হয় তাতেই কোনওরকমে সংসার চলে। এদিন নাগরিক মঞ্চ নামে একটি সংগঠন বন্ধ ডাকায় আর তাঁর বাজারে যাওয়া হয়নি। বন্ধ সফল করার জন্য পাড়ার মোড়ে মোড়ে লোকজন দাঁড়িয়েছিল। প্রধানের বাড়ির কাছে তিনিও সেই ভিড়ের মাঝেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ করেই নাইন এমএম জাতীয় পিস্তল থেকে গুলি ছিটকে এসে তাঁকে এফোঁড় ওঁফোড় করে দেয়। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। ছেলে মারা গিয়েছে শুনেই বাড়ির দাওয়ায় বসে কপাল চাপড়াতে থাকেন তাঁর বাবা। তিনি বলেন, অনেক লড়াই করে ছেলেকে বড় করেছি। অভাবের কারণে অনেক কষ্ট সহ্য করেছে ও। আমরা বাবা এবং ছেলে মিলে এলাকার চাষিদের থেকে সব্জি কিনে তা বিক্রি করতাম। প্রতিদিন সকালে উঠেই বেরিয়ে পড়তাম। এদিনও ওকে নিয়ে বাজার গেলে হয়তো এমন সর্বনাশ হতো না। সালাউদ্দিনের মা অঙ্গুরা বিবি বলেন, ছেলে কোনও দিনই রাজনীতি করেনি। বন্ধ নিয়েও ওর মাথাব্যথা ছিল না। তারপরেও ওকে গুলি করে কেন মেরে ফেলল বুঝতে পারছি না।
শোকে মূহ্যমান হয়ে রয়েছেন মৃত আনারুল বিশ্বাসের পরিজনরাও। তাঁর এক আত্মীয় আসমাবুল বিশ্বাস বলেন, উনি বেশিরভাগ সময় মসজিদে থাকতেন। কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। এদিনও রাস্তায় জটলা দেখে মসজিদ থেকে বেরিয়ে সেখানে যাচ্ছিলেন। সেসময় তাঁকে গুলি করে মারা হয়। পাড়ার বাসিন্দা আকবর শেখ বলেন, তিনি কোনও দিন এলাকার কারও সঙ্গে অশান্তিও করেননি। অত্যন্ত ভালো মনের মানুষ ছিল। তাঁকে যারা এভাবে মেরেছে তাদের কঠোর সাজা হওয়া দরকার।
অশান্তির পর শুধু ওই দু’টি পরিবার নয়, পুরো গ্রামের পরিবেশ বদলে গিয়েছে। শোকের পাশাপাশি ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা গ্রাম। অনেকে আবার ফের অশান্তির আশঙ্কা করছেন। যদিও গ্রামে পুলিসের বড় বাহিনী রয়েছে। জেলা পুলিসের শীর্ষ কর্তারা সেখানে রয়েছেন। তাঁরা গ্রামবাসীদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিচ্ছেন।