বিএনএ, আসানসোল: আসানসোল, দুর্গাপুর পুরসভা ও জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের চেষ্টা সত্ত্বেও ডেঙ্গু রোগ সংক্রমণ আটকানো যাচ্ছে না। পশ্চিম বর্ধমানে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। জেলায় এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের ২১৯। তার মধ্যে শুধু আসানসোল পুরসভায় এই সংখ্যা ১১২। একজন রোগীর ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে বলে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের তথ্য থেকে প্রকাশ পেয়েছে। এদিকে আগামী বছর আসানসোল পুরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাই পুরভোটের কথা মাথায় রেখে ডেঙ্গু নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ অনুরাধা দে বলেন, মোট ২১৯জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে।
আসানসোল পুরসভার কমিশনার খুরশিদ আলি কাদেরি বলেন, প্রয়োজনীয় সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেই গতবারের তুলনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মানুষকেও সতর্ক হতে হবে।
ডিসেম্বরেও শীতের আমেজ নেই পশ্চিম বর্ধমান জেলায়। এর জেরে ডিসেম্বর মাসেও মশার দাপট অব্যাহত রয়েছে। মশার উৎপাতের জেরে শীতেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না ডেঙ্গু। রাজ্যজুড়েই ডেঙ্গু নিয়ে সমস্যায় স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা। পশ্চিম বর্ধমানও তার ব্যতিক্রম নয়। ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে তা ২১৯-এ ঠেকেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে এই সংখ্যা। তাই বছর শেষে তা ট্রিপল সেঞ্চুরিও করতে পারে। ডেঙ্গু বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের উদ্বেগও। শুধুমাত্র আসানসোল পুরসভা এলাকার মধ্যে আসানসোলে ৭৩, কুলটিতে ২৩, জামুড়িয়া ও রানিগঞ্জে আটজন করে মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। তবে পুরসভার থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী তাদের মধ্যে ৫৩জন বাইরে থেকে আসা রোগী। পুরসভা কর্তৃপক্ষের দাবি, বাইরে থেকে আসা রোগীরা অনেক সময়ে শহরে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে, যা নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। তাদের দাবি, শুধু আসানসোলে যাদের শরীরে ডেঙ্গুর জীবাণু ধরা পড়েছে, তাদের ৩৪জনই বাইরে থেকে জ্বর নিয়ে এসেছি।
এছাড়াও পুরসভা জানিয়েছে, শুধুমাত্র ইসিএলের অধীনে থাকা এলাকা থেকে ১২জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। রেল ও ইস্কো এলাকা থেকেও একজন করে এই রোগী আক্রান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারি ওই সংস্থাগুলিকে এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে পুর আধিকারিকদের দাবি।
অন্যদিকে, আগামী বছরের শুরুতেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে পুরবোর্ডের। তাই এখন থেকেই রাজনৈতিক ঘুঁটি সাজানো শুরু করেছে সব দল। পুরসভা এলাকায় ডেঙ্গু নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। সিপিএম কাউন্সিলার তথা পুরসভার বিরোধী দলনেতা তাপস কবি বলেন, এই পুরবোর্ড কথা বেশি বলে। কাজ কিছু করে না। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে যতটা সক্রিয়তা প্রয়োজন, সব ওয়ার্ডে তা হচ্ছে না।
বিজেপির জেলা মুখপাত্র প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, তৃণমূল ভাঁওতা ছাড়া কিছুই ঩দেয় না। পুরসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক মেয়র পরিষদ সদস্য দিবেন্দু ভগৎ বলেন, ইসিএল, ইস্কো, রেলকে এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য চিঠি দিলেও তারা সদর্থক ভূমিকা নিচ্ছে না। তবু আমরা সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছি।