বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
স্বামী ফিরে আসায় স্বস্তিতে রয়েছে জাহিরুলের সদ্য বিবাহিত স্ত্রী পারমিতা বিবি। তিনি বলেন, প্লেনে ওঠার আগেই ও বাড়িতে ফোন করেছিল। ভয়ে ঠিকমতো কথা বলতে পারছে না। ওকে জঙ্গি হামলার কথা জিজ্ঞাসা করলেই ভয়ে চুপ করে যাচ্ছে। দু’দিন আগে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর কাশ্মীর পুলিস নিজেদের হেফাজতে রেখেছিল। জঙ্গি হামলা নিয়ে জানতে চেয়েছিল। শরীরে এতগুলি বুলেট লাগার পর ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে কিনা জানি না। তবে রাজ্য সরকার আমাদের পাশে রয়েছে। ওকে একটা কাজ দেওয়ার কথা জানিয়েছে। সরকারি কোনও দপ্তরে কাজ পাওয়া গেলে কাজ করতে হয়তো ওর তেমন অসুবিধা হবে না।
জাহিরুলের ঘরে ফেরার খবরে খুশি কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার আরেক সাক্ষী বাহালনগরের বাসিরুলও। হামলার কিছুক্ষণ আগে তিনি খাবার আনতে যাওয়ায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। তিনিই তাঁর সহকর্মীদের মৃতদেহ শনাক্ত করেছিলেন। বাসিরুল বলেন, ওই দৃশ্য সারা জীবন মনে থাকবে। খাবার আনার পর ঘরে ফিরে কাউকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। সেসময় একজন বলে, এখান থেকে পালিয়ে যা। এক ছুটে বাগান মালিকের ঘরে পৌঁছে গিয়েছিলাম। তার কিছুক্ষণ পরেই গুলির শব্দ পাই। তখনই বুঝে গিয়েছিলাম ওরা আর নেই। পরে সেনাবাহিনী আমাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে দেখি গলির রাস্তা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। পাঁচজন রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে রয়েছে। কিন্তু জাহিরুলকে দেখতে পাইনি। পরে জানতে পারি ও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। ওকে আবার দেখতে পাব বলে ভাবতে পারেনি। ওর সঙ্গে কথা বলতে খুব ইচ্ছে করছে।
পাঁচজনের মৃত্যুর পরেই শোকে মূহ্যমান হয়ে রয়েছে সাগরদিঘির বাহালনগর। তবে তারা জাহিরুলের জন্য প্রার্থনা করতেও ভুলে যাননি। পরিবারের পাশাপাশি পুরো গ্রাম তাঁর সুস্থতা কামনা করেছিল। সেই জাহিরুল ঘরে ফিরছেন। ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী তিনি। জঙ্গিদের নৃশংসতা এই যুবক খুব কাছে থেকে দেখেছেন। জঙ্গিরা মৃত ভেবে তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল। চারটি গুলি শরীরে লাগার পরেও মৃত্যুর ভান করে তিনি মাটিতে পড়েছিলেন। যন্ত্রণায় ছটফট পর্যন্ত করতে পারেননি। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা সেই জাহিরুলের মুখ থেকে ঘটনার বিবরণ শুনতে মুখিয়ে রয়েছে বাহালনগর।