উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
জিয়াগঞ্জ শহরের স্টিমার ঘাট এলাকায় অঙ্কিতার বাড়ি। তাঁর বাবা সজল দাস শহরের একটি খুচরো ওষুধের দোকানে কাজ করেন। মা ছায়া দাস গৃহবধূ। দুই মেয়ের মধ্যে ছোট অঙ্কিতা জিয়াগঞ্জ রাজা বিজয় সিং হাইস্কুল থেকে এবছর কলা বিভাগে পরীক্ষা দিয়ে ৪৫৪নম্বর পেয়েছেন। বাংলায় ৯৪, ভূগোলে ৮৭, অর্থনীতিতে ৮৭, দর্শনে ৯৪ পেয়েছেন। সজলবাবু ওষুধের দোকানে কাজ করে মাসের শেষে যা পারিশ্রমিক হাতে পান তা দিয়ে কোনওরকমে তিনজনের সংসার চলে যায়। বরাবরের মেধাবী ছাত্রী অঙ্কিতার পরিবারের আর্থিক প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে জানার পরেই স্কুলের শিক্ষকরা এবং কিছু সহৃদয় ব্যক্তি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। অঙ্কিতাই এবার স্কুলের সেরা হয়েছেন। অঙ্কিতার এই সাফল্যে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত শিক্ষকরা।
অঙ্কিতার বাবা সজল দাস বলেন, বড় মেয়ে পড়াশোনায় অতটা ভালো ছিল না। কিন্তু ছোট মেয়ে বরাবর পড়াশোনায় ভালো। ছোট থেকে ওকে কখনও পড়াশোনার জন্য বলতে হয়নি। মাধ্যমিকে ৮০শতাংশের উপর নম্বর পেয়েছিল। আমার আর্থিক অবস্থার কথা জেনে মাধ্যমিকের আগে থেকেই স্কুলের শিক্ষকরা এবং স্থানীয় কয়েকজন পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। উচ্চ মাধ্যমিকের পড়াশোনা চালাতে স্কুলের শিক্ষকরা খুব সাহায্য করেছেন। তাঁরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিলে মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে হতো। মেয়ের উচ্চশিক্ষার খরচ কীভাবে সামাল দেব তা ভেবেই কূলকিনারা পাচ্ছি না। মেয়েকে পড়ানোর সাধ থাকলেও সাধ্য না থাকায় রেজাল্ট বেরোনোর পরের মুহূর্ত থেকেই দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। তবে স্কুলের শিক্ষকরা আগামীতে পড়াশোনা চালাতে সাহায্য করবেন বলে মেয়েকে আশ্বাস দিয়েছেন।
অঙ্কিতার মা ছায়া দাস বলেন, আমাদের কখনও পড়াশোনার জন্য বলতে হয়নি। নিজের পড়াশোনার ফাঁকে ও আমাকে ঘরের কাজে সাহায্য করে। আগামীতে ভূগোল নিয়ে উচ্চশিক্ষা চালিয়ে চান অঙ্কিতা। বলেন, আমি আইপিএস অফিসার হতে চাই। স্কুলের শিক্ষকরা প্রতি মুহূর্তে সাহায্য করেছেন। এছাড়াও টিউশনির জন্য অন্য স্কুলের শিক্ষকদেরও বলে দিয়েছেন। স্কুলের শিক্ষকদের সাহায্য ছাড়া ভালো রেজাল্ট তো দূরের কথা, পড়াশোনা চালানো সম্ভব হতো না। আগামীতে উচ্চশিক্ষা চালাতেও সাহায্য করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন শিক্ষকরা।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, মেয়েটি মাধ্যমিকেও ভালো ফল করেছিল। তবে উচ্চমাধ্যমিকে ফল আরও ভালো করেছে। অঙ্কিতার সাফল্যে আমরা উচ্ছ্বসিত এবং গর্বিত। অঙ্কিতার উচ্চশিক্ষা চালানোর জন্য আমরা সাধ্যমতো সাহায্য করব।