উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
অন্যদিকে, সোশ্যাল সাইটে ইতিমধ্যেই বৈঠক নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। যদিও এনিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি অনুব্রত মণ্ডল। পরে তিনি ফোনে জানান, কাজল তো দলের বাইরে কোনওদিন যায়নি। দলেই ছিল। এদিন এসেছিল, অন্য নেতারাও সব ছিল। আলোচনা হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেন, কাজল শেখকে নানুরের কার্যকরী সভাপতি করা হয়েছে।
প্রবল মোদি ঝড়ে অনেক জেলাতেই তৃণমূল দুর্গ ভেঙে পড়েছে। এজেলায় দুটি আসনই শাসক তৃণমূল কংগ্রেস ধরে রাখলেও বিপুল ভোট পেয়ে তৃণমূলের একাধিপত্যে ধাক্কা দিতে সমর্থ হয়েছে বিজেপি শিবির। একবছর পরেই জেলার বেশিরভাগ পুরসভায় ভোট রয়েছে। তার পরের বছরই বিধানসভা নির্বাচন। তাই সাংগঠিক বৈঠক করে ক্ষত মেরামতিতে ব্যস্ত অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু এদিন বাড়তি গুরুত্ব পেয়ে গিয়েছে বৈঠকে কাজল শেখের হাজির থাকাকে কেন্দ্র করে।
তবে, এটা যে হওয়ারই ছিল তা বিগত নির্বাচনগুলির পরিসংখ্যান থেকেই পরিষ্কার। কেষ্ট বিনা বীরভূমে যেমন মুখ্যমন্ত্রীর গীত নেই, তেমনই কাজল বিনা নানুরেও অনুব্রতর গীত নেই। জেলাজুড়ে অনুব্রতবাবু দাপিয়ে বেড়ালেও নানুরে কিন্তু কাজল শেখ ছাড়া নির্বাচনে একছত্র আধিপত্য পাচ্ছে না তৃণমূল। তাই বাধ্য হয়েই অভিভাবক অনুব্রত সবাইকে এক করার চেষ্টায় রয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। তবে, তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে এই সমীকরণ ছিল না। সেই সময় কাজল শেখ, তাঁর দাদা শেখ শাহনাওয়াজ অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামী ছিলেন। এমনকী একটা সময় অনুব্রত মণ্ডল তাঁদের আশ্রয়ও দিয়েছিলেন। একসঙ্গে বুক চিতিয়ে লড়াই করে লালদুর্গ নানুরে ঘাসফুল ফোটান তাঁরা। কিন্তু ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে দলের সঙ্গে দূরত্ব শুরু হয় কাজল শেখের। মূলত পঞ্চায়েতের দখলদারি আর বালিঘাটের আধিপত্য নিয়েই বিবাদ বাধে। নিজের লোকেদের নির্দল হিসেবে দাঁড় করিয়ে জয়ী করেন কাজল শেখ। পরে ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে সবাই এক হয়ে ভোট করে প্রায় ৬২ হাজার ভোটে নানুর বিধানসভায় লিড পায় তৃণমূল। কিন্তু ফের এলাকার বিধায়ক গদাধর হাজরার সঙ্গে বিবাদ শুরু হয় কাজল শেখের। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে গদাধর হাজরার একাধিক অনুগামীকে খুন করার অভিযোগ ওঠে কাজল শেখের বিরুদ্ধে। কার্যত তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্কে ছেদ পড়ে তাঁর। নানুরে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডল সহ বিভিন্ন নেতা সভা করে নাম না করে কাজল শেখকে ডাকাতের সঙ্গে তুলনা করেন। ২০১৬ সালে কাজল শেখও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট করিয়ে সিপিএমকে জিতিয়ে দেন বলে অভিযোগ। কিন্তু তাতেও দমে যায়নি শাসক শিবির। কাজল শেখ ব্রাত্যই থেকে যান। এবার লোকসভা ভোটেও নিজের পঞ্চায়েত ছাড়া তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তৃণমূল জয় পেলেও একচেটিয়া জয় পায়নি। এমনকী বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলের উপর চড়াও হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল নেতৃত্ব ফের কাজলকে সামনে আনার জন্য ব্লকের কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।