কর্মরতদের উপার্জন বৃদ্ধি পাবে। শরীর-স্বাস্থ্য ভালোই যাবে। পেশাগত পরিবর্তন ঘটতে পারে। শিল্পী কলাকুশলীদের ক্ষেত্রে শুভ। ... বিশদ
লকডাউন শিথিল হতেই ১ জুলাই ডুয়ার্সের হোটেল, রিসর্ট, হোম স্টেগুলি খুলেছে। বর্তমানে ডুয়ার্সের হোটেল, লজ, হোম স্টেতে দুই-তিন শতাংশ পর্যটক আছেন। একদিকে যাত্রীবাহী সাধারণ ট্রেন পরিষেবা বন্ধ, অন্যদিকে এখন পর্যটকদের জঙ্গলে প্রবেশ বন্ধ। ফলে সেভাবে পর্যটকের দেখা মিলছে না। এই পরিস্থিতি আরও কিছুদিন চলবে বলে মনে করছেন রিসর্ট ব্যবসায়ীরা। এদিকে পর্যটক কম থাকায় ব্যবসা মার খেলেও বিদ্যুৎ বিল থেকে শুরু করে কর্মচারীদের বেতন সব কিছুই গুনতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে রয়েছেন সেভকের তিস্তা থেকে অসম সীমান্ত সঙ্কোশ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকার পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা।
ডুয়ার্স ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক দিব্যেন্দু দেব বলেন, আমাদের এখানে প্রায় ৩০০টি রিসর্ট, হোটেল, হোম স্টে রয়েছে। অন্যান্য বছর এই সময় প্রায় ৫০ শতাংশ বুকিং থাকত। কিন্তু বর্তমানে সেখানে মাত্র দুই-তিন শতাংশ পর্যটক রয়েছেন। সরকারি নির্দেশে ২২ মার্চ থেকে আমরা হোটেল, লজ বন্ধ করে দিই। টানা তিনমাসের বেশি সময় পর ১ জুলাই সবকিছু খুলেছে। কিন্তু পর্যটকদের দেখা মিলছে না। আমরা মনে করছি, অক্টোবরে পুজোর আগে পর্যন্ত এই পরিস্থিতি চলবে। তারপর অবস্থার উন্নতি হবে। এই সাতমাসে ডুয়ার্সের পর্যটন শিল্পে প্রায় ৭২০ কোটি টাকার ক্ষতি হবে। ব্যবসা বন্ধ থাকলেও অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে আমাদের খরচ রয়েছে। ফলে আমরা গভীর সমস্যায় রয়েছি।
উত্তরবঙ্গের অন্যতম পর্যন্ত ক্ষেত্র ডুয়ার্স। সুন্দরী ডুয়ার্সের মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের টানে বছরভর হাজার হাজার পর্যটক এখানে আসেন। কিন্তু করোনার কারণে এবার পর্যটকদের আসার পরিসংখ্যান তলানিতে ঠেকেছে। দীর্ঘদিন সবকিছু বন্ধ ছিল। ডুয়ার্সে তিন শতাধিক রিসর্ট, হোটেল, লজ ও হোম স্টেতে সব মিলিয়ে ৮ হাজারের বেশি রুম রয়েছে। পর্যটনের ভরা মরশুমে এগুলি ১০০ শতাংশ ভরে যায়। ডুয়ার্সে বিভিন্ন অভয়ারণ্য, বনাঞ্চল, নদী, পাহাড়, পিকনিক স্পট রয়েছে। করোনার কারণে আতঙ্কে মানুষ বাইরে বেরচ্ছেন না। তাছাড়া লকডাউনের জন্য দীর্ঘ কয়েকমাস সবকিছু বন্ধ হয়ে ছিল। কিন্তু একমাসের কিছু বেশি সময় হল ধীরে ধীরে সব স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু মানুষ এখনও বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যেতে ভয় পাচ্ছেন। হোটেল, রিসর্ট, লজ, হোম স্টে মালিকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা করে রেখেছেন। এদিকে নিয়ম মাফিক ১৫ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর জঙ্গলে পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ। ফলে গত একমাসে এখানে তেমন পর্যটক আসেননি।
সংগঠনের দাবি, এই সময়কালের মধ্যে হোটেল, রিসর্টগুলিতে পর্যটক না থাকলেও সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করা, বিদ্যুতের বিল মেটানো, কর্মচারীদের বেতন দেওয়া সহ একাধিক খাতে খরচ করতেই হচ্ছে। কিন্তু আয় কিছুই হচ্ছে না। এই বিষয়গুলি তাঁরা বিভিন্ন মহলে একাধিকবার জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও সুরাহা পাননি বলে দাবি। তাই অনেকেই সুদিনের আশায় রয়েছেন। পর্যটন ব্যবসায়ীদের আশা, অবস্থার পরিবর্তন হলে, ট্রেন পরিষেবা চালু হলে, পুজোর সময় আবারও পর্যটকরা ডুয়ার্সমুখী হবেন। আগের মতো গমগম করবে ডুয়ার্সের ট্যুরিস্ট স্পটগুলি। ডুয়ার্সের ছোট ছোট জনপদ আবারও পর্যটকদের ভিড়ে ভরে উঠবে। এতে শুধুমাত্র হোটেল, রিসর্ট মালিকরাই নন, তারসঙ্গে লাভবান হবেন এসবের উপরে নির্ভরশীল অন্যান্য জীবিকার মানুষও। ফাইল চিত্র