বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মুখ্য কৃষি অধিকর্তা জোর্তিময় বিশ্বাস বলেন, জমিতে আগুন দেওয়ার ফলে কত ক্ষতি হচ্ছে তা কৃষকরা জানেন না। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এনিয়ে আমরা লাগাতার প্রচার করেছি। তবু কোনও কাজ হচ্ছে না। আমরা লেগে আছি। তবে কৃষকদের সচেতনতা বাড়াতে সাধারণ নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। বুনিয়াদপুরের দমকল আধিকারিক প্রদীপ সাহা বলেন, মাঠ থেকে আগুন আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। বাড়িঘর পুড়ে যায়। তবু এটা কমানো যাচ্ছে না। এব্যাপারে চাষিদের সচেতন করতে আরও উদ্যোগ নিতে হবে।
কৃষি প্রধান দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় দীর্ঘদিন ধরে ধান ও গম চাষ শেষে জমিতেই ফসল ঝাড়াই-মাড়াইয়ের কাজ হয়ে থাকে। মূলত ধানের ক্ষেত্রে বোরো ধান জমিতেই ঝাড়াই করা হয়। বোরো ধান মেশিন দিয়ে কাটার কারণে খড় ব্যবহার হয় না। জমিতেই সেগুলি পালা করে রাখা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ধান ও গম কাটার পড়ে নাড়া বা খড়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বোরো ধান কাটা শুরু হতেই গ্রামেগঞ্জে মাঠে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। তীব্র গরমে নাড়া শুখনো থাকার কারণে বিঘের পর বিঘে জমি দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মাঝেমধ্যে আগুন জমির পাশ্ববর্তী বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। কৃষকদের ধারণা জমিতে আগুন ধরিয়ে দিলে একদিকে যেমন ছাই হচ্ছে, তেমনি পোকামাকড় মারা যাচ্ছে। এতে জমি উর্বরতা আরও বাড়বে।
তবে কৃষিদপ্তর জানাচ্ছে, চাষিদের এই ধারণা একেবারে ভুল। তাদের দাবি, আগুন লাগানোর ফলে জমির উর্বরতা বাড়ার পরিবর্তে আরও কমে যায়। জমিতে আগুন ধরানোর পর কেঁচো থেকে শুরু করে অনেক উপকারী পোকামাকড় মারা যাচ্ছে। কেঁচো ও পোকামাকড় জমির উর্বরতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও আগুন ধরানোর ফলে মাটির গভীরে প্রায় ছ’ফুট পর্যন্ত সমস্ত শেকড়, ডাল পুড়ে মাটির চরিত্র বদলে যাচ্ছে। খড় পোড়ানোর পরে পটাসিয়াম অক্ষত থাকলেও বাকি সমস্ত জরুরি রাসায়নিক পদার্থ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মাটি পুড়ে ইটের মতন হচ্ছে। সমস্যাটি নিয়ে কৃষকদের মধ্যে একাধিক বার প্রচার করা হয়েছে। এখনও তা করা হচ্ছে। জমিতে যাতে আগুন না লাগানো হয় তা নিয়ে কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে মাইকিং, সচেতনতা শিবির, লিফলেট বিলি করা হচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই পুরনো ধ্যানধারণা থেকে কৃষকদের সরিয়ে আনা যাচ্ছে না। এতে প্রচুর ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।