পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি। প্রতিকার: আজ দই খেয়ে ... বিশদ
বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে বিপ্লববাব মিত্র না অর্পিতা ঘোষ— কে প্রার্থী হবেন তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই নেতানেত্রীর অনুগামীদের মধ্যে ব্যাপক তরজা শুরু হয়েছে। এবার সরাসরি দুই নেতা-নেত্রী একে অপরের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় জেলা রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক মহলে ধারণা, প্রার্থীপদ নিয়ে এই ঝামেলা চলতে থাকলে বিধানসভা নির্বাচনের ভরাডুবির মতোই লোকসভা নির্বাচনেও তৃণমূলে বড়সড় ক্ষতি অনিবার্য। সেই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এলাকায় প্রভাব বাড়াতে বাড়ে বিজেপি।
সংসদ সদস্য অর্পিতা ঘোষ বলেন, বিপ্লববাবু নানা কথা রটাচ্ছেন আমার নামে। তাতে কিছু যায় আসে না আমার। আমাকে প্রার্থী করলে বিপ্লববাবু জেতাতে পারবেন না— এমনটা তিনি শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন বলে আমার কানে খবর এসেছে। দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমাকে জেতানোর ব্যাপারে বিপ্লববাবু কেউ না। আমার উপর জনগণ ও তৃণমূল কর্মীদের সমর্থন রয়েছে। আমি প্রার্থী হলে নেত্রীর আশীর্বাদে আর কর্মীদের সমর্থনেই জিতে যাব।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তৃণমূলের সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, অর্পিতাদেবী যে অভিযোগ করছেন তা একেবারে ভিত্তিহীন। আগের বারে অর্পিতাকে ভোটে জিতিয়েছি। এবারও প্রার্থী হলে তাঁকে জয়যুক্ত করে মুখ্যমন্ত্রীকে এই কেন্দ্র উপহার দেব। মানুষ আমাকে প্রার্থী হিসেবে চাইতেই পারেন। নেত্রী যদি আমাকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করান তবে একই ভাবে এই কেন্দ্রে তৃণমূল জয়লাভ করবে। তবে প্রার্থী নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেত্রীই নেবেন। এবং সেই সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।
তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের কে প্রার্থী হবেন তা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা দেখা দিয়েছে। প্রার্থীর দৌড়ে সংসদ সদস্য অর্পিতা ঘোষের পাশাপাশি বিপ্লববাবুর নাম উঠে এসেছে। প্রার্থী নিয়ে জেলায় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা কার্যত দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। একদিকে বিপ্লববাবুর অনুগামীরা রয়েছেন। অন্যদিকে অর্পিতাদেবীর অনুগামীরা। জেলা ভূমিপূত্রকে প্রার্থী হিসেবে চাই, অর্পিতা ঘোষের মতো বহিরাগতকে প্রার্থী হিসেবে চাই না এমন লেখালেখি সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করছেন বিপ্লববাবুর অনুগামীরা। অন্য দিকে সংসদ কোটার ১০০ শতাংশ টাকা জেলা উন্নয়নে কাজে লাগিয়েছেন, আগামীতে আবার প্রার্থী করলে জেলা উন্নয়নে ভরে যাবে এমন সব লেখাও ফেসবুকে পোস্ট করছেন অর্পিতাদেবীর অনুগামীরা। এনিয়ে ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই নেতানেত্রীর অনুগামী তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে লড়াই ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক মহলেও এনিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে।
এদিকে প্রার্থীপদ নিয়ে এই জল্পনা, প্রচার, দাবি, পাল্টা দাবির মধ্যে ইতিমধ্যেই অর্পিতাদেবী ময়দানে নেমে পড়েছেন। বালুরঘাটে বাড়ি ভাড়া নিয়ে রাষ্ট্রমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদাকে নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন অর্পিতাদেবী। বাচ্চুবাবুর সঙ্গে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন। সকলকেই বলছেন এবার দাঁড়ালে আগের বারের মতোই সমর্থন করতে হবে। এদিকে বিপ্লববাবুও নির্বাচনী প্রস্তুতি হিসেবে এলাকায় কর্মিসভা করছেন। সেখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে কড়া বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি বিজেপি যাতে একটিও ভোট না পায় সেকথা প্রচার করছেন। প্রার্থী নিয়ে তাঁর একটাই বক্তব্য, প্রার্থী এখনও ঠিক হয়নি। দল যাঁকেই প্রার্থী করুক তাঁকে জেতাতে হবে।