নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি, ২২ ফেব্রুয়ারি: পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন পুরভোটে উত্তরবঙ্গকে বিশেষ নজরে রাখছে বিজেপি। এবং সেই কারণে পুর নির্বাচনে মূলত উত্তরবঙ্গের পুরসভা ভিত্তিক ‘ভিশন ডকুমেন্ট’-এ গ্রিন সিটি, বিনামূল্যে ওয়াই ফাই পরিষেবার মতো একাধিক বিষয় তুলে ধরা হবে বলে ঠিক করেছে গেরুয়া শিবির। পুরসভাগুলিতে সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল ব্যবস্থা চালুর উপরেও জোর দেওয়া হবে। আজ এ ব্যাপারে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলীয় নেতা রথীন্দ্র বসু বলেছেন, ‘দেশের অন্যান্য রাজ্যের পুরসভাগুলির কাজকর্ম যদি দেখেন, তাহলেই দেখতে পাবেন, এসব ক্ষেত্রে বাংলা কতটা পিছিয়ে রয়েছে। ভিশন ডকুমেন্টগুলিতে আমরা এই বিষয়গুলির উপরই জোর দেওয়ার পরিকল্পনা করেছি। গ্রিন সিটি, ফ্রি ওয়াইফাই পরিষেবা, ডিজিটাল পদ্ধতিতে যাবতীয় কাজ সেরে ফেলার মতো প্রক্রিয়া সবই রাখা হবে ভিশন ডকুমেন্টে। এটি তৈরি হচ্ছে পুরসভাভিত্তিক। উত্তরবঙ্গের দলীয় সংগঠন আগের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী হয়েছে। ফলে পুরভোটে উত্তরবঙ্গে বিশেষ নজর থাকছেই।’
বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পরিপ্রেক্ষিতেই রাজ্যের আসন্ন পুরসভার নির্বাচনে উত্তরবঙ্গকে বেশি করে ‘ফোকাস’ করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের মোট ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে উত্তরবঙ্গে রয়েছে সাতটি আসন। মালদহ উত্তর ও দক্ষিণ, বালুরঘাট, রায়গঞ্জ, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার। এর মধ্যে শুধুমাত্র মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রটিকে বাদ দিয়ে বাকি ছ’টি আসনেই ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছে বিজেপি। আসন্ন পুরভোটে উত্তরবঙ্গকে নিয়ে যা বিশেষভাবে ভরসা জোগাচ্ছে বিজেপির রাজ্য নেতাদের। পশ্চিমবঙ্গের পুরভোটের কথা মাথায় রেখে কি আলাদাভাবে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বিজেপির উত্তরবঙ্গের এমপিদের? বালুরঘাটের সংসদ সদস্য সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘প্রত্যেককেই নিজেদের সেরাটা দিতে বলা হয়েছে। পুরসভাভিত্তিক একটি করে জনাপাঁচ-সাতেকের কমিটি তৈরি করা হয়েছে। বালুরঘাটের এমপি হিসেবে আমি আমার এলাকার সেই কমিটিতে রয়েছি। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাকে নিজের এলাকাতেও সময় দিতে হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি সারা রাজ্যেই পুর নির্বাচনে ভালো ফল করবে দল।’
দলীয় সূত্রের খবর, ‘ফোকাস’-এ রাখলেও উত্তরবঙ্গের জন্য আলাদা কোনও পুর নির্বাচনী প্রচারের অভিমুখ ঠিক করছে না বিজেপি। অন্যগুলোর মতোই এক্ষেত্রেও জোর দেওয়া হবে এলাকা ভিত্তিক এজেন্ডার উপর। তবে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা হবে বর্তমান পুরবোর্ডগুলির ‘অযোগ্যতা’, ‘স্বজনপোষণে’র মতো একাধিক অভিযোগ। বিজেপি পুরবোর্ড দখল করলে কীভাবে এলাকার উন্নয়নের কাজে ঝাঁপানো হবে, নির্বাচনী প্রচারে তুলে ধরা হবে তাও। দিল্লি ভোটের থেকে শিক্ষা নিয়ে ইতিমধ্যেই বাংলায় দলের পুরভোটের প্রচারের অভিমুখ পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় পার্টি। সিএএ, এনআরসির পরিবর্তে অনেক বেশি করে সামনে আনতে বলা হয়েছে স্থানীয় ইস্যুকেই। প্রস্তাবিত ভিশন ডকুমেন্টে তা তুলে ধরতেই মরিয়া বিজেপি নেতৃত্ব।