ব্যবসায় বাড়তি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত সাফল্য নাও দিতে পারে। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি। শ্বাসকষ্ট ও বক্ষপীড়ায় শারীরিক ক্লেশ। ... বিশদ
মিলেট শস্যকে মিড ডে মিলে আনতে আগেও ‘অনুরোধ’ করা হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি যে রূপরেখা বেরিয়েছে, তাতে স্পষ্ট, এবার মিলেট মেনুতে অন্তর্ভুক্ত করতে বাধ্য স্কুলগুলি। কেন মিলেট, তার লিখিত ব্যাখ্যাও দিয়েছে কেন্দ্র। তাতে ক্যালসিয়াম বেশি, আয়রন বেশি, ফাইবার বেশি। এসব খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) কম হওয়ায় ডায়াবেটিসের জন্যও ভালো। রয়েছে আরও পুষ্টিগুণ। তালিকা করে তা তুলে ধরা হয়েছে। দক্ষিণ ভারতের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, যাদের দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মিড ডে মিলের হেঁসেল রয়েছে (এ রাজ্যে নেই), তাদের দিয়ে একটা সমীক্ষাও করিয়েছে তারা। মিলেটের বিভিন্ন খাবার খাইয়ে নাকি বাচ্চাদের মধ্যে শারীরিক উন্নতি দেখা গিয়েছে। তাই রাজ্যগুলিকে নির্দেশ, মিড ডে মিলে মিলেট রাখতে হবে। তার জন্য মেনুও ঠিক করে নিতে বলা হয়েছে।
ডায়েটিশিয়ান সঞ্চিতা শীল বলেন, ভাতে যে মানের প্রোটিন থাকে, এসব মিলেট শস্যে থাকা প্রোটিনের চেয়ে তা অনেক উন্নত। তবে, মিলেটে ফাইবার বেশি থাকে। সেটা কোষ্ঠকাঠিন্যের ক্ষেত্রে উপকারী হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে মিড ডে মিলের কমিউনিটি কিচেন চালানো এক মহিলা বলেন, রাঁধুনিদের দিয়ে এসব রান্না করানো কঠিন ব্যাপার। আপাতত তো প্রায় অসম্ভব। বড়জোর খিচুড়ি জাতীয় কিছু করা যেতে পারে। কিন্তু গরমকালে দুপুরে তো মিলেটের রুটি বাচ্চাদের খাওয়ানো যায় না। তা যেমন শরীরের পক্ষে ভালো হবে না, তেমনই এত রুটি তৈরি করাও পরিশ্রম এবং সময়সাপেক্ষ।
অনেকেই আবার এটার মধ্যে অন্য রাজনীতি দেখছেন। মিলেট উৎপাদন বেশি হয় পশ্চিম ভারতে। তা উৎপাদনে জল কম প্রয়োজন। তাই সুখা জমিতেও সেগুলি ভালো ফলন দেয়। রাজস্থান বা গুজরাতের শুকনো, অনুর্বর জায়গায় এগুলির চাষ বেশি। কিন্তু বাংলায় জলের জোগান যথেষ্ট। মাটিও উর্বর। তাই ধান উৎপাদনে বাংলা শীর্ষস্থানে থাকে। বার্ষিক প্রায় আড়াই কোটি মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়। মিড ডে মিলের চাল আসে ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (এফসিআই) থেকে। স্কুলগুলি বিনা পয়সায় সেটা পায়। আবার এফসিআই এখন মিড ডে মিলের চাল পায় রাজ্যের খাদ্য দপ্তরের কাছ থেকে। বহুদিন ধরেই অবশ্য রাজ্যের অভিযোগ, এফসিআই চালবাবদ বিল মেটাচ্ছে না। এই অবস্থায় মিড ডে মিলে মিলেটের জোগান বাড়লে, তা মূলত আসবে পশ্চিমের রাজ্যগুলি থেকে। উপকৃত হবেন সেখানকার কৃষকরা। বাংলার ধান সেক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়বে।
মিড ডে মিলের জন্য কিচেন গার্ডেন করার প্রস্তাবও এবার রীতিমতো আদেশের আকারেই আসছে। চলতি সপ্তাহে যে বা বার্ষিক পরিকল্পনা এবং বাজেটের প্রস্তাব চাওয়া হয়েছে, তাতে কিচেন গার্ডেন গুরুত্বপূর্ণ। নিজেদের বাগানে বহু স্কুল কিছুটা শখেই সব্জি ফলায়। কিন্তু এবার ব্যাপারটা অনেক সিরিয়াস। বলা হয়েছে কৃষি বিকাশ কেন্দ্র, রাজ্যের উদ্যানপালন দপ্তরের সহযোগিতায় কিচেন গার্ডেন করবে স্কুলগুলি। প্রতিটি স্কুলে কোন সব্জি ফলানো হচ্ছে, কত পরিমাণে (কেজিতে) ফলানো হচ্ছে, তার হিসেব দিতে হবে। বাগানের ধরন (খোলা না ঘেরা), আয়তন, সেসব হিসেবও দিতে হবে কেন্দ্রের কাছে।