কর্ম, বিদ্যা ক্ষেত্রে উন্নতির যোগ। আয় ব্যয় ক্ষেত্রে সমতার অভাব। স্বাস্থ্য ভালো থাকলেও আঘাতযোগ থাকায় ... বিশদ
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ওই শিশুকন্যা বাড়ির কাছেই একটি দোকানে গিয়েছিল। ফেরার সময় অশোক টাকার লোভ দেখিয়ে তাকে ঘরের ভিতরে নিয়ে যায়। মেয়ে ঘরে না ফেরায় তাকে এদিক-ওদিক খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। শেষমেশ অশোকের বাড়ি থেকে তাকে অর্ধনগ্ন ও রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। চাদর ও মশারি দিয়ে জড়ানো ছিল সে। পাশেই গামছা পরে বসেছিল অভিযুক্ত অশোক। শিশুটিকে তৎক্ষণাৎ ধনেখালি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিকে, অভিযুক্তকে ধরে চলতে থাকে বেধড়ক মারধর। পরে গুড়াপ থানার পুলিস এসে অশোককে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় চুঁচুড়া হাসপাতালে। তার বিরুদ্ধে খুন ও পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। শিশুকন্যার বাবা অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
প্রতিবেশীদের কথায়, মৃত শিশুকন্যার বাবা পেশায় দিনমজুর। এই মেয়ে ছাড়াও তাঁর আট বছরের এক ছেলে রয়েছে। অভাবের সংসার। অন্যদিকে, পড়শি অশোক সিং বাড়িতে একাই থাকত। সেও দিনমজুর। বিয়ে করেছিল দু’বার, কিন্তু তার স্বভাব-চরিত্রের কারণে দু’জনেই তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। অশোকের বিরুদ্ধে এই প্রথম নয়, কুড়ি বছর আগেও এক শিশুকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা সুভাষ মুখোপাধ্যায় বলেন, এলাকায় চোলাইয়ের একাধিক ঠেক রয়েছে। এইসব ঠেকই অপরাধের আঁতুরঘর। প্রশাসন সব জেনেও এ বিষয়ে নির্বিকার। অবিলম্বে চোলাইয়ের কারবার বন্ধ করা দরকার। এদিকে, এই ঘটনায় গুড়াপে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভের আশঙ্কায় বিশাল পুলিস বাহিনী মোতায়েন করে গুড়াপ ও ধনেখালি থানা।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক মহলেও অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের সুর। বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মজুমদার শিশুটির বাড়িতে গেলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। বিজেপির কর্মীদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, উত্তেজনা ছড়াতেই তাঁরা এসেছিলেন। প্রমাণ লোপাটের সম্ভাবনাও ছিল। পুলিস এসে দু’পক্ষকেই সরিয়ে দেয়। তুষার মজুমদারের বক্তব্য, মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকরা। আমরা চাই, সব দল একযোগে অভিযুক্তের ফাঁসির দাবি জানাক। ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র শিশুটির বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, চোলাই মদের যে অভিযোগ উঠেছে, সে ব্যাপারে পুলিসকে ব্যবস্থা নিতে বলব।
জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার কল্যাণ সরকার বলেন, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পকসো ও খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। শিশুটির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য চুঁচুড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পরে ঠিক হয়, কলকাতার কোনও হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হবে। সেইমতো দেহটি কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ধৃতকে চুঁচুড়া আদালতে তোলার কথা। তবে অভিযুক্ত হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তাকে আদালতে হাজির করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।