শরীর-স্বাস্থ্যের আকস্মিক অবনতি। বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে। সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ, ব্যবসায় নতুন সুযোগ ... বিশদ
রবিবার সকালে কালীঘাটে ফুটপাতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় শঙ্কর মণ্ডল নামে এক যুবককে। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিলেন, তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। কয়েকজন পেটানোর প্রতিবাদও করেন। তাঁদের ভয় দেখায় অভিযুক্ত ও তার ছেলে। ঘটনার কথা পুলিসকে জানালে তার পরিণতি ভালো হবে না বলেও হুমকি দেয়। পুলিস আসার পরই এলাকাবাসী এই নিয়ে প্রতিবাদে সরব হন। তাঁরা গোটা ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন তদন্তকারী অফিসারদের কাছে। কারা শঙ্করকে পেটাচ্ছিল, তাদের নাম ও পরিচয় জানান। কিন্তু তাঁদের বক্তব্যের উপর পুরোপুরি ভরসা করতে পারছিলেন না অফিসাররারা। তাঁদের ধারণা ছিল, আর পাঁচটা ঘটনার মতোই এলাকার বাসিন্দারা অতিরঞ্জিত করে কিছু বলছেন। সেই কারণেই এলাকায় থাকা সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। এরপরই তদন্ত অন্যদিকে মোড় নেয়। ফুটেজে যাদের মারধর করতে দেখা গিয়েছিল, তাদের চিহ্নিত করতে প্রত্যক্ষদর্শীদের ডাকা হয়। তাঁরাই প্রত্যেককে চিহ্নিত করেন। জানা যায় তাদের নাম ও পরিচয়। ফলে তদন্ত গতি পায়।
ওই ফুটেজ দেখে পুলিস জানতে পারে, ঘটনায় জড়িত রয়েছে কানাই, তার ছেলে বাপি এবং এক নিরাপত্তরক্ষী। কানাই কালীঘাট এলাকার একটি গ্যারাজে থাকে। সেখানে সে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করে। ছেলে তার সঙ্গেই থাকে। কয়েকদিন আগে বাপির মোবাইল চুরি যায়। কানাই পুলিসকে জানিয়েছে, শঙ্করের যে চোর হিসেবে বদনাম রয়েছে, তা তারা জানত। ওই এলাকাতেও বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনার পর শঙ্করের নাম উঠেছিল। ছেলের মোবাইল চুরির কয়েকদিন আগে থেকে গ্যারাজের আশপাশে তাঁকে ঘোরোঘুরি করতে দেখা গিয়েছিল। তা থেকেই কানাইয়ের সন্দেহ হয়, ছেলের মোবাইলটি শঙ্করই চুরি করেছে। তিনি কোথায় থাকেন, তা জানা ছিল। ভোর তিনটে নাগাদ কানাই, তার ছেলে বাপি ও এক নিরাপত্তারক্ষী সেখানে আসে। কেউ যাতে কিছু জানতে না পারে, সেজন্যই ভোরবেলাকে বেছে নেয় তারা। এরপর তিনজনে মিলে বেধড়ক মারধর শুরু করে শঙ্করকে। প্রথমে তাঁকে কিল-চড়-ঘুসি মারা হয়। এরপর লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। তাতেই তাঁর শরীরের ভিতরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর আঘাত লাগে। ধৃত পুলিসকে জানিয়েছে, পেটানোর ঘটনা দেখেছিলেন রাস্তার ধারের ফ্ল্যাটের এক মহিলা। তিনি প্রতিবাদও করেন। কিন্তু তাঁকে ধমকায় অভিযুক্তরা। অচৈতন্য হয়ে পড়ার পর শঙ্করকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। তবে গ্যারাজে থাকছিল না। এলাকায় তাদের নিয়ে কী কথাবার্তা হচ্ছে, সেব্যাপারে খোঁজখবর রাখছিল। সিসিটিভির ফুটেজ দেখার পরই পুলিস খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, কানাই কালীঘাট এলাকাতেই রয়েছে। এরপরই হানা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে ছেলেকে পাওয়া যায়নি।