কাজকর্মে জটিলতা মুক্তি ও কর্মোন্নতি। অপচয়মূলক বা অপ্রত্যাশিত ব্যয় বাড়বে। পারিবারিক ক্ষেত্রে সুসম্পর্ক। ... বিশদ
স্বপনবাবু সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি নিচ্ছেন। তিনি ভোটারদের মন জয় করতে মাঠে কৃষকদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন। আবার কখনও শ্রমিকদের কাছে গিয়ে জানতে চাইছেন, আপনারা সামাজিক সুরক্ষা যোজনা প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন তো? ভোটারদের মন জয় করতে তাঁদের সঙ্গে বসেই জল-ভাত খাচ্ছেন। দলের জেলা সভাপতিও একের পর এক বৈঠক করে দলের কর্মীদের টিপস দিচ্ছেন। তিনি নিজেও পথসভা করছেন। দু’জনেই পোড় খাওয়া রাজনৈতিক নেতা। ভোট কীভাবে করাতে হয় তা তাঁদের ভালোই জানা আছে। সেই কারণে তৃণমূল প্রার্থী অনেকটাই নিশ্চিন্তে রয়েছেন এই কেন্দ্রে।
তবে বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকারকে ‘সেনা’ ছাড়াই ময়দানে নামতে হয়েছে। অধিকাংশ বুথেই সভাপতি নেই। নেতৃত্বের অভাবে প্রচারেও তাঁকে বেগ পেতে হয়েছে। শুধু কবিগানই তাঁর ভরসা। জেলার অনেকেই বলছেন, কবিয়াল হিসেবে অসীমবাবুর প্রতিভা নিয়ে কোনও প্রশ্নই নেই। মঞ্চ মাত করে দিতে পারেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাঁর ‘ফ্যানে’র সংখ্যা কম নয়। এই জেলাতেও তাঁর অনেক শ্রোতা রয়েছে। কিন্তু মঞ্চ আর রাজনৈতিক ময়দান যে সম্পূর্ণ আলাদা তা তিনি ভালোই টের পাচ্ছেন।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের একাংশই অসীমবাবুর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। এক নেতা দল ছেড়ে বিজেপিকে তুলোধোনা করছেন। তাঁর ময়দানে প্রতি পদে পদে কাঁটা বিছানো। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁর কেন্দ্রে প্রচার করেছেন। রাজ্যের অন্যান্য নেতারাও একাধিক কর্মসূচি নিয়েছেন। কিন্তু ময়দানে দক্ষ কর্মী না থাকায় ইভিএমে কতটা প্রভাব ফেলা যাবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। অসীমবাবু অবশ্য বলেন, মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। বিজেপি সরকার মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। এটা বহু আন্দোলনের ফল। এছাড়া মানুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভোট দেবে।
তৃণমূল অবশ্য প্রচারে উন্নয়নের কথা বলছে। দলের সেনাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, মানুষ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্পগুলি দেখে ভোট দেবেন। প্রতিটি গ্রামের রাস্তা বদলে গিয়েছে। পানীয় জল পৌঁছেছে। কয়েকদিন আগে একটি সভা থেকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলেন, বিজেপি বঞ্চনা ছাড়া আর কিছুই করেনি। মানুষ উন্নয়নের স্বার্থেই তৃণমূলকে ভোট দেবে। তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলা সরকার প্রচারে বেরিয়ে বলছেন, দিদি আপনাদের জন্য অনেক কাজ করেছেন। ভোটে জয়ী হলে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে আরও বেশি জোর দেব।
বর্ধমান পূর্বের সমস্ত বিধানসভা কেন্দ্র তৃণমূলের দখলে রয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পূর্বস্থলী উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি কিছুটা সাফল্য পেয়েছিল। তৃণমূলের দাবি, সেখানে হারানো জমি উদ্ধার হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই লিড পাওয়া যাবে। গত লোকসভা নির্বাচনেও প্রায় ৮০ হাজার ভোটে তৃণমূল প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন। এবার মার্জিন আরও বাড়বে, এমনটাই আশা শাসক শিবিরের। বিজেপি প্রার্থী গানে গানে বলছেন, দুর্নীতি আর অনিয়মে পতন হবে তৃণমূলের।