কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর ঈর্ষার কারণে সম্মানহানি হবে। ব্যবসায়ীদের আশানুরূপ লাভ না হলেও মন্দ হবে না। দীর্ঘ ... বিশদ
আরামবাগ মহকুমা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতার জেরে আগে থেকেই প্রশাসনিকভাবে সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। যে কারণে কাঁচা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও হতাহতের কোনও খবর নেই। বিভিন্ন জায়গায় ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তরের কর্মীরা পড়ে যাওয়া গাছ কাটার কাজ শুরু করেছেন। পাশাপাশি বিদ্যুৎ দপ্তরে কর্মীরাও যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। তা জেলাস্তরে পাঠানো হবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওইদিন খানাকুলের মাড়োখানা, জগতপুর, নন্দনপুর, ধান্যঘোরী, নতিবপুর, পলাশপাই, রাজহাটি, নরেন্দ্রপুর, বলপাই সহ বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ের তাণ্ডব বেশি চলে। খানাকুলের রাজহাটি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মিস্ত্রিপাড়া এলাকার গৃহবধূ রায়না খাতুন বলেন, সকাল থেকেই ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। বিকেল থেকেই তার তেজ আরও বাড়ে। কাঁচা ঘরে কোলের সন্তানকে নিয়েছিলাম। হঠাৎই রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ টিনের ছাউনির উপর একটি বড় গাছ ভেঙে পড়ে। সেই সময় কী করব, বুঝে উঠতে পারিনি। কোনওরকমে ঘরের বাইরে এসে প্রতিবেশীদের পাকা বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিই। ঝড়ের এই ভয়াবহতা আগে কোনও দিন দেখিনি। গ্রামে সারারাত ঝড়ের তাণ্ডব চলছে। এখনও সেই মুহূর্তটার কথা মনে পড়লে আঁতকে উঠছি।
এবিষয়ে কামারপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তপন মণ্ডল বলেন, বিভিন্ন এলাকার ক্ষতির পরিমাণ আমরা ব্লক অফিসে জানিয়েছি। পঞ্চায়েতের তরফে পড়ে যাওয়া গাছ সকাল থেকেই কাটা শুরু হয়।
এদিন সকালে ঝড়-বৃষ্টি থামার পর নিজের কাঁচা বাড়ির দৃশ্য দেখিয়ে কেঁদে ফেলেন গোঘাটের পশ্চিমপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝরিয়া এলাকার বাসিন্দা ষষ্ঠী রুইদাস। দমকা হাওয়ায় তাঁর মাটির বাড়ির টিনের চাল উড়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, বিকেলের পর শুধুই কানে এসেছে শোঁ শোঁ শব্দ। সেই সঙ্গে ছিল প্রবল বৃষ্টি। আমার বাড়ির চাল বেশ কিছুটা দূরে নিয়ে গিয়ে ফেলে।
অন্যদিকে, ঝড়ের তাণ্ডবে ওই রাতে আরামবাগ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের একমাত্র প্রবেশপথের সামনে গাছ পড়ে যায়। ফলে বেশকিছুটা সময় হাসপাতালের প্রবেশ পথ বন্ধ থাকে। পরে রাতেই গাছ কাটার কাজে হাত লাগায় সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। এছাড়াও পুরশুড়া ব্লকের সোদপুর এলাকায় আরামবাগ-তারকেশ্বর রাজ্য সড়কের উপর একটি বড় গাছ ভেঙে পড়ে। এদিন সকালে ওই গাছ কেটে সরানোর পর রাজ্য সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ঝড়ের তাণ্ডবে বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে। তারফলে সন্ধ্যা থেকেই বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। এদিন সকাল থেকে বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীরা ওই এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করার কাজে হাত লাগান। তবে পুরোপুরি জন-জীবন স্বাভাবিক করতে আরও দু’-একদিন সময় লাগবে বলে প্রশাসনিক কর্তারা মনে করছেন।