কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর ঈর্ষার কারণে সম্মানহানি হবে। ব্যবসায়ীদের আশানুরূপ লাভ না হলেও মন্দ হবে না। দীর্ঘ ... বিশদ
লালবাগ মহকুমার ডাহাপাড়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মাবের আলি বলেন, এলাহিগঞ্জ গ্রামের একই পরিবারের দু’জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁরা সম্পর্কে বউমা এবং শাশুড়ি। তাঁরা মুম্বইয়ে কাজ করতেন। তাঁদের সঙ্গে আরও দু’জন গ্রামে ফিরেছেন। তাঁরাও একই পরিবারের সদস্য। পরিবারের বাকি সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর। অন্যদিকে, ডোমকলের করোনা আক্রান্ত ৩৬ বছরের যুবকও মুম্বই থেকে ফিরে বাড়িতেই ছিলেন। সারাংপুর পঞ্চায়েতের প্রধান কিমকিম বেগম বলেন, জাড়াবেড়িয়া খাসপাড়া গ্রামের ওই যুবক চারদিন আগেই মুম্বই থেকে ফিরেছিলেন। তিনি করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়ার পরই পাড়া সিল করা হয়েছে। ডোমকলের জিৎপুরের নতুনপাড়ায় এর আগে পাঁচজন করোনা আক্রান্তের হদিশ পাওয়া গিয়েছিল। তাঁরাও সকলেই একই পরিবারের সদস্য।
অন্যদিকে শক্তিপুরের সোমপাড়া-১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সাইফুদ্দিন শেখ বলেন, মহারাষ্ট্র থেকে মহম্মদপুর গ্রামের আক্রান্ত যুবক ১৬মে ফিরেছেন। তাঁর আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়ার পরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর আগে এই ব্লকে কেউ করোনায় আক্রান্ত হননি। তাই বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মুম্বই, মহারাষ্ট্র এবং গুজরাত থেকে ফিরে আসা লোকজনদের লালারস সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই কয়েক হাজার শ্রমিক হাইরিস্ক জোন থেকে ফিরেছেন। এখনও অনেকেই ওই এলাকাগুলিতে আটকে রয়েছেন। তাঁদেরও কিছুদিনের মধ্যে ফেরার কথা রয়েছে। তাতে আধিকারিকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। বাইরের রাজ্য থেকে ফিরে আসা প্রত্যেককে হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখে নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক আধিকারিকরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে সতর্ক করছেন। তবে অনেকেই তারপরও স্বাস্থ্য বিধি মানছেন না বলে অভিযোগ। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য প্রশাসন সবরকম চেষ্টা করছে। বাইরে থেকে যাঁরা ফিরছেন তাঁদের প্রত্যেকের নিয়ম মেনে চলা উচিত। জেলার সদর শহরে করোনা আক্রান্তের হদিশ মেলায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। মধুপুর এলাকার ৬৪ বছরের ওই বৃদ্ধা কীভাবে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তা নিয়েও আধিকারিকরা নিশ্চিত হতে পারেননি। তিনি শহরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। অপরেশনের আগে তাঁর লালারস পরীক্ষা করা হয়। পজিটিভ রিপোর্ট আসার পরেই তাঁকে কোভিড হাসাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে করোনা আক্রান্তরা ছাড়াও উপসর্গ থাকা কয়েকজনেরও আলাদাভাবে চিকিৎসা চলছে।
এদিকে গ্রামের একই পরিবারের দু’জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন জানাজানি হতেই এলাহিগঞ্জে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সকালে গ্রামের রাস্তায় কিছু মানুষের দেখা মিললেও বেলা বাড়তেই গ্রামের রাস্তাঘাট শুনশান হয়ে যায়। করোনা আক্রান্ত শাশুড়ি ও বউমা এলাহিগঞ্জের শকুন্তলা মোড় এলাকার বাসিন্দা। আক্রান্তের বাড়ি সহ ১০-১২টি বাড়ি নিয়ে বেশ কিছুটা এলাকা কন্টেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিক ও পুলিস কর্তাদের উপস্থিতিতে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে এলাকা ঘিরে দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকায় ঢোকা বা বেরনো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সরকারি বিধিনিষেধ সঠিকভাবে মানা হচ্ছে কিনা সেবিষয়ে নজরদারি চালানোর জন্য স্থানীয়দের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি কন্টেইনমেন্ট এলাকায় নজরদারির পাশাপাশি এলাহিগঞ্জ সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় করোনা মোকাবিলায় মাস্ক ব্যবহার ও সরকারি নির্দেশ সহ প্রচার চালানো হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে জেলার সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক, লালবাগ মহকুমা পুলিস আধিকারিক ডাহাপাড়া গ্রামে যান। এলাকার কয়েকজন যুবক বলেন, অনেকেই বিধিনিষেধ মানছিল না। কিন্তু গ্রামে করোনা আক্রান্তের কথা জানার পরেই বেশিরভাগ মানুষ ঘরবন্দি হয়েছেন।