বিএনএ, বহরমপুর: পুরসভা ভোটে জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জে ঘুরে দাঁড়াতে ‘চ্যালেঞ্জ ১০’ প্রতিযোগিতা শুরু করল যুব কংগ্রেস। তারা একটি হোয়াটস অ্যাপ নম্বর দিয়ে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য শহরের সাধারণ লোকজনদের কাছে আবেদন করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ার ওয়ালে তারা লিখেছে, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার গুরুত্বপূর্ণ ১০টি সমস্যা তুলে ধরলেই পুরস্কার পাওয়ার সুযোগ মিলবে। এক মাসের মধ্যে সমস্যার কথা জানাতে হবে। ১৬ নভেম্বর থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিযোগিতা চলবে। পুরসভা এলাকার বাসিন্দাদের কাছে থেকে উঠে আসা জ্বলন্ত সমস্যাগুলিকে সামনে রেখে কংগ্রেস ময়দানে নামতে চাইছে। তাদের দাবি, হোয়াটস অ্যাপ নম্বরে অনেকেই সমস্যার কথা তুলে ধরবেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলি নিয়ে আন্দোলন করা হবে। যারা বড় সমস্যাগুলি চিহ্নিত করবে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। প্রকাশ্যে নাম জানাতে আপত্তি থাকলে সেটা গোপন রাখা হবে। রাজনৈতিক মহলের মতে, কংগ্রেস চ্যালেঞ্জ-১০প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জনসংযোগে জোর দিতে চাইছে। যারা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে তাদের কাছে খুব সহজেই নেতৃত্ব পৌঁছতে পারবে।
গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এই শহরের ১৭টি ওয়ার্ডেই বিজেপি এগিয়ে রয়েছে। একসময় শহরে কংগ্রেসের সংগঠন মজবুত থাকলেও এখন তা অনেকটাই নড়বড়ে। সমর্থকের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। সেকারণে আমজনতাকে কংগ্রেসের প্রতি আকর্ষণ বাড়াতেই তাদের যুব সংগঠন এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন।
জিয়াগঞ্জ আজিমগঞ্জ পুরসভা এখন তৃণমূলের দখলে রয়েছে। তারাও কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের দাবি, শহরে অনেক কাজ হয়েছে। তারপরেও কোনও বড় ধরনের সমস্যার কথা জানতে পারলে তা সমাধানের চেষ্টা করা হবে। কংগ্রেস তা আমজতার কাছে থেকে জেনে তুলে ধরলে ভালোই হবে। তৃণমূল সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বিজেপির দিকে ঢলে যাওয়া ভোট ব্যাঙ্ক ফেরাতে তারাও নানা কৌশল নিচ্ছে। তারা অন্যভাবে জনসংযোগ বাড়িয়ে পুরবাসীর মন জয় করার পরিকল্পনা নিয়েছে। তবে যুব কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই অভিনব বলেই মনে করছে। সোশ্যাল সাইটে তাদের আবেদন ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। মুর্শিদাবাদের যুব কংগ্রেস নেতা অর্ণব রায় বলেন, আমরা এলাকায় বহু সমস্যার কথা জানি। তবুও সাধারণ লোকজনদের কাছে থেকে আমরা শহরের সমস্যাগুলি শুনতে চাইছি। সেকারণেই চ্যালেঞ্জ ১০ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। আমাদের বিশ্বাস বহু সমস্যার কথা উঠে আসবে। তার মধ্যে যারা সবচেয়ে বড় ১০টি সমস্যার কথা তুলে ধরবে তাদেরকে পুরস্কার দেওয়া হবে। পুরস্কার হিসেবে বই বা অন্য কোনও সামগ্রী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তুলে দেওয়া হবে। তৃণমূল পরিচালিত জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। কংগ্রেস কেন, অন্য যে কেউ আমাদের সামনে সমস্যার কথা তুলে ধরলে তা সমাধানের চেষ্টা করব। অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। কাজ করতে গেলেই ভুল হয়। আমরা সেই ভুলগুলি জানতে পারলে ঠিক করে নেব। তবে এটুকু বলতে পারি শহরে বহু সমস্যার সমাধান হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সামনের বছর জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ সহ জেলার ৬টি পুরসভার ভোট রয়েছে। তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সব দল কোমর বেঁধে ময়দানে নেমেছে। জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুর এলাকায় লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস বা তৃণমূলের হিসেব বদলে দিয়ে বিজেপি কয়েক কদম এগিয়ে যায়। সেই ভোট ফিরিয়ে আনার জন্য কংগ্রেস এবং তৃণমূল দু’পক্ষই ময়দানে নেমেছে। অন্যদিকে বিজেপিও সহজে হাল ছাড়তে রাজি নয়। বিজেপি নেতা শাখারভ সরকার বলেন, লোকসভা নির্বাচনের মতো পুরসভা ভোটেও মানুষ আমাদের ভোট দেবে। প্রকৃত উন্নয়ন আমরাই করতে পারি।