বিতর্ক-বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম-পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থোপার্জনের সুযোগ।প্রতিকার: অন্ধ ব্যক্তিকে সাদা ... বিশদ
ঘটনাস্থল জলপাইগুড়ি তিস্তা ব্রিজ। সকাল হলেই দড়ি, লাঠি ও একটি ছোট কাঠ নিয়ে ব্রিজের উপর চলে আসেন এলাকার অনেকেই। প্রথমে একটি ছোট কাঠ লম্বা দড়ির সঙ্গে বাঁধা হয়। সেই কাঠের উপর বসে দড়ি ধরে ব্রিজের উপর থেকে মাঝ নদীর জলের কিছুটা উপরে নামেন প্রতি দলের একজন করে ব্যক্তি। দড়ির অপরপ্রান্ত বাঁধা থাকে সেতুর উপরে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকেন দলের বাকিরা। যিনি দড়ি ধরে নিচে নামেন, তাঁর হাতে থাকে একটি লাঠি। সেই লাঠি দিয়ে নদীর স্রোতে ভেসে আসা কাঠ টেনে আনা হয়। প্রতিবছর বর্ষাতে নিত্যদিন এমন সংগ্রাম চলে নদীর উপর।
স্থানীয়দের বক্তব্য, এবারে লোকজন একটু বেশি আসছে। আসলে লকডাউনে অন্যান্য কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না। তাই বাড়িতে বসে না থেকে এভাবে কাঠ সংগ্রহ করে বিক্রি করার লোকজন বেড়ে গিয়েছে।
এভাবে জলের উপরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে ভয় লাগে না? মুচকি হেসে বছর একুশের বিলু দাস বলেন, বিপদ তো থাকেই। কিন্তু ভয় পেলে পেট চলবে কীকরে? লকডাউনে তেমন কাজ হচ্ছে না। সংসার তো চালাতে হবে। অবশ্যই শুধু লকডাউন বলে নয়, প্রতিবছরই বর্ষায় সুযোগ সুবিধা পেলে নদী থেকে কাঠ তুলতে আসেন তিনি।
সেতুর উপর দাঁড়িয়ে কাঠ গুছিয়ে রাখছিলেন মাঝ বয়সি এক ব্যক্তি। নদীর জলে কীভাবে কাঠ ভেসে আসে? হাতের কাজ থামিয়ে তিনি বলেন, আসলে তিস্তা নদীর পাড়ে অনেক গাছ রয়েছে। বর্ষায় মাটি আলগা হয়ে নদীর জলে ভেসে যায় কিছু গাছ। জলে পচে গিয়ে টুকরো টুকরো হয়ে যায় ওই কাঠ। সেই কাঠই জ্বালানি হিসেবে বিক্রির জন্য নদী থেকে তোলা হয়।
কত দামে বিক্রি হয় এই কাঠ? অন্য একটি দলে থাকা কয়েকজন যুবক বলেন, ভেজা কাঠ তো কেউ কিনবে না। তাই প্রথমে কাঠ শুকনো করতে হয়। কেজি দরে বিক্রি হয় শুকনো কাঠ। কখনও কেজি প্রতি সাড়ে পাঁচ টাকা তো কখনও ছ’টাকা পাওয়া যায়। সেই টাকা গোটা দলের মধ্যে ভাগ হয়।
কিন্তু এই কাজে ঝুঁকি প্রবল। দুর্ঘটনা ঘটারও আশঙ্কা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে জেলার নতুন পুলিস সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।