বিতর্ক-বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম-পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থোপার্জনের সুযোগ।প্রতিকার: অন্ধ ব্যক্তিকে সাদা ... বিশদ
শিলিগুড়ি মহকুমা এবং ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকায় জমি মাফিয়াদের দাপট অনেকদিনের। কোথাও সরকারি জমি দখল করে বিক্রি করা হচ্ছে। সেখানে গড়া হচ্ছে বাড়ি। আবার কোথাও সরকারি জমি দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে দোকান ঘর। এর বিরুদ্ধে অনেকদিন ধরেই সরব পর্যটনমন্ত্রী। মাস খানেক আগে তিনি একটি প্রশাসনিক বৈঠকে বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দার্জিলিং জেলা প্রশাসনকে দিয়েছিলেন। সেইমতো কয়েকদিন আগে সেভক রোডে একটি স্কুলের সামানে জবরদখল উচ্ছেদ অভিযান চালায় প্রশাসন। তারা বুলডেজার দিয়ে সেখানে কয়েকটি দোকান ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়।
ওই ঘটনার পর ফের জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পর্যটনমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিগত বামফ্রন্ট জমানা থেকেই শিলিগুড়ি শহর ও গ্রামীণ এবং ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকায় সরকারি জমি দখল করা হচ্ছে। একটি অসাধু চক্র এ কারবার করছে। ২০১১ সাল থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। প্রচুর নতুন রাস্তা, সেতু তৈরি হয়েছে। এ জন্য জমির দামও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। জমি কারবারিদের দৌরাত্ম্যও বেড়েছে। এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরকে চিঠি দিয়েছি। আমি নিজেও কয়েকবার জমি দখলদারির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছি। কোভিড পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অসাধু চক্র আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সরকারি জমি দখল করে বেআইনি নির্মাণ আর বরদাস্ত করা হবে না। কারণ সরকারি জমি রাজ্য সরকারের সম্পদ। সেই জমি দখল হয়ে যাওয়ায় উন্নয়নমূলক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। তাই বেআইনি নির্মাণগুলি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, শিলিগুড়ি শহরে সেভক রোড, তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাস, ফুলবাড়ি প্রভৃতি এলাকায় সরকারি রাস্তা দখল করে দোকান, বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। যারফলে অনেক জায়গায় রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছে। কোথাও কোথাও ড্রেন এবং মজে যাওয়া নদীর উপর লোহার কাঠামো দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে দোকান। এতে জল নিকাশি ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কিছু জায়গায় আবার পুরসভার জমিও দখল করা হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা সরকারি জমিগুলি প্রথমে বাঁশ পুঁতে দখল করছে জমি মাফিয়ারা। এরপর তারা পাকা দেওয়াল তুলে জমিগুলি ঘিরে রাখছে। শুধু তাই নয়, তারা কৌশলে ওই জমিগুলির জাল নথিও তৈরি করছে। ওই চক্রের খপ্পরে পড়ে অনেকে প্রতারিতও হচ্ছেন।
পর্যটনমন্ত্রী বলেন, সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে জমি দখলের কিছু অভিযোগ পেয়েছি। ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ির দুই জেলাশাসক এবং শিলিগুড়ি পুরসভার কমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁদেরকে জবরদখল হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছি। এ জন্য তাঁদেরকে থানায় এফআইআর করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পুলিসকেও এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। শিলিগুড়ির পুলিস কমিশনারের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা হয়েছে। কয়েকদিন আগে তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসের সামনের জমি দখল নিয়ে এনবিএসটিসির ম্যানেজিং ডিরেক্টরের সঙ্গেও কথা হয়েছে। এবার সরকারি জমি থেকে জবরদখলের বিরুদ্ধে কঠর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মন্ত্রী জমি দখলের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিলেও সাধারণ মানুষ সন্তুষ্ট নন। তাঁদের অভিযোগ,জমি হাঙ্গরদের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যোগাযোগ রয়েছে। কাজেই ওই মাফিয়াদের কিছু হবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। মন্ত্রী এর আগেও কয়েকবার উদ্যোগ নিলেও বাস্তবে কিছুই পরিবর্তন হয়নি।