বিতর্ক-বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম-পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থোপার্জনের সুযোগ।প্রতিকার: অন্ধ ব্যক্তিকে সাদা ... বিশদ
বাবার মৃত্যুর পর মা ও ছোট ছোট তিন ভাইয়ের সংসার তাকেই সামলাতে হয়েছে এই অল্প বয়সে। সংসার টানতে উমর ফারুককে জমিতে চাষ করতে হতো। সারাদিন জমিতে কাজ করার ফলে স্কুলে যাওয়া অনিয়মিত হয়ে পড়ে। তারই মধ্যে কঠোর পরিশ্রম করে এবছর মাধ্যমিকে স্কুলে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে সকলকেই তাক লাগিয়ে দিয়েছে সে।
মালিওর গ্রাম পঞ্চায়েতের তিওর পাড়ার বাসিন্দা তার মা মমতাজ মহল বলেন, আমার স্বামী মহম্মদ আলাউদ্দিন ২০১৬ সালে মারা যান। তিনি মিটনা হাইস্কুলেরই পার্শ্ব শিক্ষক ছিলেন। তাঁর চিকিৎসার জন্য জমানো সব টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। এখন ভরসা পারিবারিক পেনশনের মাত্র তিন হাজার টাকা। বড় ছেলে উমরকে পড়াশুনার পাশাপাশি চাষবাস করতে হয়। তারপরেও সে অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে।
উমর বলে, মায়ের একার পক্ষে সংসার সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছিল। তাই প্রয়োজনে পড়াশুনার পাশাপাশি জমিতে কাজ করতে হয়েছে। আমি বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখি। চিকিৎসক হয়ে পিছিয়ে পড়া হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার মানুষের সেবা করতে চাই।
তার স্কুলের সহ শিক্ষক আনন্দমোহন মণ্ডল জানান, স্কুলের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে উমর ফারুককে যথাসাধ্য সাহায্য করা হবে। তার এই রেজাল্টে আমরা সকলেই গর্বিত।
এদিকে, হরিশ্চন্দ্রপুরেরই সেলিম আখতার দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে
এবছরের হাই মাদ্রাসা ফাইনাল পরীক্ষার মেধা তালিকায় রাজ্যে সপ্তম স্থান অধিকার করেছে। সে ব্লকের মিটনা সোলেমানিয়ে হাই মাদ্রাসার ছাত্র। তার প্রাপ্ত নম্বর ৭৫৮। সেলিম বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায় বলে জানিয়েছে। বাবা ইসমাইল পেশায় দিনমজুর। ব্লকের তালসুর গ্রামের বাসিন্দা তারা। সামান্য কিছু জমি আছে। তাতেই চাষবাস করে কোনওরকমে সংসার চালান ইসমাইল। তবে শুধু চাষবাসের উপর নির্ভর করে সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়ে। তাই তাঁকে বছরের বিভিন্ন সময় ভিন রাজ্যে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে যেতে হয়। অভাবের সংসারে রয়েছে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। সেলিম সবার ছোট। বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা করতে গেলে যে টাকার প্রয়োজন, তা জোগাড় করা কঠিন ওই পরিবারের পক্ষে। ছেলে ভালো ফল করার পর তাই অথৈ জলে পড়েছেন ইসমাইল।