শরীর-স্বাস্থ্যের আকস্মিক অবনতি। বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে। সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ, ব্যবসায় নতুন সুযোগ ... বিশদ
টেরি ফিৎজেরাল্ড। মসজিদে গণহত্যাকারী ব্রেন্টন টারান্টের কাকু। টিভিতে খবর দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন টারান্টের দিদিমা মেরি ফিৎজেরাল্ডও। আজ অস্ট্রেলিয়ার চ্যানেল নাইন নেটওয়ার্কে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বারবারই ঢোক গিলছিলেন দু’জনেই। গলা শুকিয়ে আসছিল তাঁদের। যে ছেলেটা তাঁদের কোলেপিঠে শৈশব কাটিয়েছে, সে এমন হাড়হিম হত্যাকাণ্ড চালাতে পারে, তা কিছুতেই মন থেকে মেনে নিতে পারছিলেন না কাকু ও দিদিমা। ‘আমরা সবাই ওর কৃতকর্মে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছি। ওর মধ্যে কোনওদিনই কোনও অস্বাভাবিক আচরণ আমাদের নজরে আসেনি। শ্বেতাঙ্গের অহঙ্কার ওর মধ্যে কখনই ছিল না। ছিল না হিংসা, বিদ্বেষ। তবে ইউরোপ থেকে ফিরে আসার পর আচমকা ওর মনের কিছু পরিবর্তন দেখেছিলাম। কিন্তু সেটা যে এতটা ভয়ঙ্কর হয়ে দাঁড়াবে ভাবতেই পারছি না। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়ালেসের বাড়িতে বসে কথাগুলো একটানা বলে খানিক থামলেন দিদিমা।
দিদিমা ও কাকুর বাড়ির কাছাকাছি ছোট্ট শহর গ্র্যাফটনে টারান্টের ঝাচকচকে বাড়ি। সেটি এখন পুলিসের ঘেরাটোপে। চারিদিকে বজ্রআঁটুনি নিরাপত্তা। বাড়ির ভিতরের লোকসংখ্যা বলতে এখন দু’জন। টারান্টের মা ও বোন। বাইরের লোকের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ। ফোনেও নজরদারি পুলিসের। পরিজনদের সঙ্গে কথা বলতেও কড়া নিষেধজ্ঞা। দিদিমা ফিৎজেরাল্ড বলছিলেন, ‘ওদের নিরাপত্তার কথা ভেবে পুলিস পাহারা দিচ্ছে। পুলিস তাদের কর্তব্য পালন করছে। এটা ওদের জন্যই প্রয়োজন। ওরা কেমন রয়েছে, কীভাবে রয়েছে, তা আমরা এখনও জানতে পারিনি।’
গ্র্যাফটন শহরেই শৈশব কেটেছে টারান্টের। সেখানকার স্কুলেই পড়াশোনা। তাঁর পরিবারের লোকেদের কথায়, ছোটবেলা থেকেই শান্ত স্বভাবের ছিল টারান্টে। বড় হয়ে তার একমাত্র শখ হয়ে দাঁড়ায় বিদেশে ঘুরে বেড়ানো। টারান্টের দিদিমা ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রায় সব সময়ই বিদেশে ঘুরে বেড়াত টারান্টে। মাঝে কিছুদিন বন্ধ ছিল। ক’বছর আগে ওর বাবা মারা যান। তার পর থেকে আবার বিদেশ ভ্রমণের শখ চেপে বসে। কয়েকবছর ধরে টারান্টে দক্ষিণ নিউজিল্যান্ডের একটি শহরে বসবাস করতে শুরু করেছিল।
তবে বছর খানেক আগে বোনের জন্মদিনে বাড়িতে ফিরেছিল টারান্টে। তখনও তার স্বভাব, আচার-আচরণে খারাপ কিছু নজরে আসেনি বলে জানিয়েছেন দিদিমা। তিনি বলেছেন, ‘আর পাঁচটা স্বাভাবিক ছেলের মতো বাড়িতে সবার সঙ্গে মেলামেশা করেছে। মা, বোনের সঙ্গে ভালো আচরণও আচরণও করেছে। তবে আমাদের মনে হয়, ইউরোপ থেকে ফিরে আসার পর ওর মনের কিছু পরিবর্তন ঘটেছিল।’ টারান্টের কাকা বলছিলেন, টিভিতে ওর নামটা শোনার পরই চিৎকার করে বলেছিলাম, না এটা হতে পারে না। কিন্তু পরে ভুল ভাঙে ওর ছবি দেখে। ততক্ষণে একরাশ হতাশা আমাকে গ্রাস করে ফেলেছে।