কাজকর্মে জটিলতা মুক্তি ও কর্মোন্নতি। অপচয়মূলক বা অপ্রত্যাশিত ব্যয় বাড়বে। পারিবারিক ক্ষেত্রে সুসম্পর্ক। ... বিশদ
রাজ্যের যে ক’টা আসনের ভোট নিয়ে মানুষের আগ্রহ তুঙ্গে, তার মধ্যে বহরমপুর একেবারে শীর্ষে। পাঁচবারের সাংসদ অধীর চৌধুরী এবারও কংগ্রেসের প্রার্থী। গতবার প্রায় ৮০ হাজার ভোটে জিতলেও একুশের নির্বাচনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির জেলায় কংগ্রেসকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রেই কংগ্রেস থার্ড। তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের ভোটের ব্যবধান প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ। সেই অঙ্কে কংগ্রেসকে এই লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবার কথাই নয়। তবুও রাখতে হচ্ছে, কারণ প্রার্থীর নাম অধীর চৌধুরী। ধার কমেছে, কিন্তু ভারটা এখনও আছে। আর সেটা অধীর মিথের।
বহরমপুর বাসস্ট্যান্ডে বাস ধরার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন রেজিনগরের মইনুল হাসান। তাঁর কথায়, শুনতে খারাপ লাগবে। কিন্তু এবার বহরমপুরের বহু এলাকায় ‘মেরুকরণে’র ভোট হবে। তাহলে কি লড়াইটা দুই ফুলের মধ্যে? মইনুল হেসে বলেন, ‘না, অধীর চৌধুরীও লড়াইয়ে থাকবেন। পাঁচ বছর সাংসদ হিসেবে যে কাজ করেছেন, তার জোরে তিনিও ভালোই ভোট পাবেন। তাই এবার অঙ্কটা কঠিন।’
এখনও বোধহয় মেরুকরণের রাজনীতি খেটেখাওয়া মানুষের মধ্যে সেভাবে শিকড় ছড়াতে পারেনি। তাদের কাছে এখনও সরকারের পরিষেবাই প্রাধান্য পায়। সেজন্যই বেলডাঙার সারগাছি থেকে বহরমপুরে খাগড়াগড় বাজারে সব্জি বিক্রি করতে আসা বিদিশা নন্দী একগাল হেসে বলেন, ‘হাওয়া কোন দিকে বলতে পারব না। তবে, আমরা দিদির দিকে।’ কারণটা কি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার? এক গাল হাসি হেসে বলেন, ‘হুঁ’। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘দিদির পরিষেবার জোরেই এবার বহরমপুরে জিতব।’
অধীর চৌধুরীর ভোট প্রচারের স্টাইলটা অন্যরকম। ভোটের আগে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঘুরে বেড়ান, পদযাত্রা করেন। কিন্তু ভোট চান না। প্রচারের ফাঁকে কাউকে জড়িয়ে ধরেন, কারও সঙ্গে হাত মিলিয়ে জানতে চান, ভালো আছিস তো? কাউকে আবার হাত নেড়ে বোঝান, পাশে আছি। সংগঠনের ঘাটতি এভাবেই ‘পার্সোনাল টাচে’ পূরণের চেষ্টা করেন। এতদিন এভাবে সফল হয়েছেন। কিন্তু এবার? লড়াইটা সত্যিই কঠিন। সেটা অধীরবাবুও জানেন। তাই ভোট প্রসঙ্গে তাঁর সংক্ষিপ্ত উত্তর, ‘মানুষের কাছে যাচ্ছি, বলছি। তারপর দেখা যাক।’
অপারেশন টেবিলে সার্জেন হিসেবে নির্মলবাবু যতটা স্বচ্ছন্দ্য, ঠিক ততটাই সাবলীল রাজনীতির ময়দানে। আত্মবিশ্বাসে ফুটছেন। বললেন, ‘যখন যে কাজটা করেছি, মন দিয়ে করেছি। সেটা পড়াশোনা হোক বা ডাক্তারি। এবার মানুষের জন্য কাজ করব। সুযোগ পেলে সেটাও মন দিয়েই করব।’ ডাক্তারবাবুর ইমেজই বিজেপিকে বহরমপুরে লড়াইয়ে ফিরিয়েছে। ঘাসফুল শিবিরের এবার লক্ষ্য, মুর্শিদাবাদে তিনে তিন। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অঙ্ক কষে বহরমপুরে ইউসুফ পাঠানকে খেলতে পাঠিয়েছেন। ইউসুফকে নিয়ে ঘোঁট পাকানোর চেষ্টা হয়েছিল অনেক। কিন্তু হালে পানি পায়নি। তিনি যেখানে যাচ্ছেন যুবকরা তাঁকে মৌমাছির মতো ছেঁকে ধরছেন। তাঁর জনপ্রিয়তা দেখে তৃণমূলের কোনও নেতাই ‘কাবাব মে হাড্ডি’ হতে চাইছেন না। তাই বহরমপুরে লড়াই ত্রিমুখী হলেও অ্যাডভ্যান্টেজ ইউসুফের।