উচ্চশিক্ষায় নামী স্বদেশি/ বিদেশি প্রতিষ্ঠানে সুযোগ পেতে পারেন। স্ত্রীর স্বাস্থ্য বিষয়ে চিন্তা। কর্মে অগ্রগতি। ... বিশদ
ত্রিমোহিনী বাজারের উল্টো দিকে কালিন্দী নদীর পাড় বরাবর চলে গিয়েছে ঢালাই রাস্তা। সেখানে গাছের নীচে জিরোচ্ছিলেন বৃদ্ধ সুবল সর্দার। ভোটের হাওয়া কেমন, জানতে চাইলে হাতের ইশারায় দূরে শ্মশানঘাটের কাছে জটলা পাকানো কয়েকজন যুবককে দেখিয়ে দিলেন। বললেন, ‘ওদের কাছে যান। সব পেয়ে যাবেন।’ কারা ওরা? মুচকি হেসে বৃদ্ধের হেঁয়ালি, ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ’! যুবকদের কাছে গিয়ে দেখা গেল, তাঁরা তৃণমূলের পতাকা লাগাচ্ছেন। পতাকা বাঁধছিলেন যে যুবক, তাঁর নাম সুজিত পাত্র ওরফে বাপন। কথায় কথায় জানা গেল, তিনি রেখা পাত্রের খুড়তুতো দেওর। ভক্ত দাস তাঁকে সাহায্য করছিলেন। তিনি রেখাদেবীর খুড়তুতো ননদের স্বামী। সম্পর্কে জামাইবাবু। বউদি তো বিজেপি প্রার্থী! আর আপনারা তৃণমূলের পতাকা বাঁধছেন? ঝাঁঝিয়ে উঠলেন ভক্ত দাস। ‘আমরাই পাত্রপাড়ায় প্রথম আন্দোলন শুরু করেছিলাম। আমাদের কথায় আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল রেখা বউদি। তখন তো ধর্ষণের অভিযোগ ছিল না। ন্যায্য পাওনার দাবিতে দলমত নির্বিশেষে আন্দোলন করেছিলাম। তারপর বিজেপির কাছে অনেকে বিক্রি হয়ে গেল। আমরা তৃণমূলে ছিলাম। তৃণমূলেই আছি।’ সুজিতবাবু অবশ্য এতটা আক্রমণাত্মক নন। তাঁর বক্তব্য, ‘বউদির মনে হয়েছে বিজেপি করবে, তাই করছে। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে তৃণমূল করি। স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থেকে আন্দোলন শুরু করেছিলাম। এখন তো সরকার সব দাবি মেনে নিয়েছে। তাই আমরাও তৃণমূলের হয়ে কাজ করছি।’
প্রার্থীকে নিয়ে বসিরহাটের বিজেপি প্রথম থেকেই দ্বিধাবিভক্ত। রেখাদেবীর নাম ঘোষণার পর ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটেছিল সন্দেশখালিতে। তাতে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপির বহু স্থানীয় নেতা। প্রধানমন্ত্রীর ফোন সেই ক্ষোভে কিছুটা প্রলেপ দিলেও তা ধিকি ধিকি করে জ্বলছে আজও। আর তাই গত বিধানসভা ভোটের বিজেপি প্রার্থী অধ্যাপক ভাস্কর সর্দার সহ বহু আদি বিজেপি নেতাকে এখনও প্রচারে সেভাবে দেখা যায়নি বলে খবর। এমনকী, আন্দোলন পর্বে গ্রেপ্তার হওয়া বিকাশ সিংয়ের দলবলও চুপচাপ। তিনি নিজে বসিরহাটে বেশি থাকছেন। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, আন্দোলনের মাটি থেকে প্রার্থী করে রাজনৈতিক চমক দেওয়া গেলেও ভোট বাক্সে সুফল মিলবে তো? বিজেপির বসিরহাট লোকসভার কনভেনার বিকাশ সিংয়ের দাবি, ‘প্রথম দিকে হয়তো কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি ছিল। কিন্তু এখন সবাই জোটবদ্ধ।’