গৃহাদি নির্মাণে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণপ্রাপ্তির যোগ আছে। কাজকর্মের স্বাভাবিক গতি বজায় থাকবে। বাতের বৃদ্ধি। ... বিশদ
উল্টোদিকে, ঠাকুরবাড়ির প্রতি অসম্মানের অভিযোগে ভোটের মুখে বেশ ব্যাকফুটে বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। একবাক্যে বনগাঁ বলছে, কাজটা মন্ত্রীমশাই মোটেই ঠিক করেননি। যেমন সুদেব বিশ্বাস, রাজীব মণ্ডল। বনগাঁয় সবজি বিক্রি করে ফিরছিলেন। দেখা বাগদা বাজারের সামান্য আগে। একযোগে টিফিন করছিলেন। নাম শুনেই রেগে লাল সুদেব। খাওয়া থামিয়ে প্রায় খেঁকিয়ে উঠে বললেন, ‘শান্তনু ঠাকুর মন্ত্রী হওয়ায় ভেবেছিলাম আমাদের কিছু হবে। সব ভাঁওতা। উল্টে জেঠিমা ও বোনকে মেরে বড়মার ঘর দখল করল! ঠিক কাজ হল? মমতাবালার চোখের জলের দাম দিতে হবে ওকে...।’ আর ঠাকুরবাড়ি নিয়ে নোংরা রাজনীতিতে বীতশ্রদ্ধ রাজীব। বলেই দিলেন, ‘শুনেছি বনগাঁয় নিউ ওরাকান্দি তৈরি হচ্ছে। ওটা তৈরি হলে ওখানে গিয়ে পুজো দেব। ঠাকুরবাড়ির নোংরামির মধ্যে আর ঢুকব না।’ ঠাকুরবাড়িতে তালা ভেঙে বীণাপানিদেবীর ঘর দখলের নোংরা রাজনীতি নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ বনগাঁ, গাইঘাটার বহু মতুয়া ভক্ত ও গোঁসাই।
এ তো গেল ঠাকুরবাড়ির কথা। শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ চড়েছে সিএএ নিয়েও। প্রশ্ন উঠছে, নিঃশর্ত নাগরিকত্ব নয় কেন? নাগরিকত্বের টোপ দিয়ে মোদি সরকার আদতে এনআরসি কার্যকর করার চেষ্টা করছে বলেই বিশ্বাস মতুয়াদের। চাঁদপাড়া বাজারে একরাশ অভিযোগ উগরে দিলেন সুজন দাস। তাঁর কথায়, ‘আমাদের পূর্বপুরুষদের মতো ঠাকুরবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা প্রমথরঞ্জন ঠাকুরও এসেছিলেন ওপার বাংলা থেকে। নাগরিকত্ব নিতে হলে শান্তনুবাবুর পরিবারকেও আমাদের মতো আবেদন করতে হবে। ওঁরা তো আবেদন করেননি। তাহলে আমরা কেন করব? তাহলে কি আমাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে! এক সময় হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুর আমাদের সমাজের উন্নয়নে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এখন দেখছি তাঁদের উত্তরসূরিরা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলছে।’ এরপরই ওরাকান্দি প্রসঙ্গে কিছুটা নরম হলেন। বললেন, ‘সেই তুলনায় দিদি অনেক কিছু করেছেন। বনগাঁয় নিউ ওরাকান্দি তারই ফল।’
‘নিউ ওরাকান্দি’ মন্দির রূপায়ণের অন্যতম পুরোধা বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ। তিনি বলেন, ‘ওরাকান্দি ও গাইঘাটা ঠাকুরবাড়ির মাটি ও জল শ্রদ্ধার সঙ্গে শোভাযাত্রা করে আনা হয়েছে। মন্দির তৈরির সূচনায় ওরাকান্দি থেকে শ্রীমা মা ও ঠাকুরবাড়ি থেকে মমতা বালা ঠাকুর এসেছিলেন। শুনেছিলাম অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরির সময় ঠাকুরবাড়ি থেকে পাঠানো পবিত্র জল ওরা রাস্তায় ফেলে দিয়েছিল। ঠিক হয়েছিল সেটা? এটা তো একপ্রকার বঞ্চনাই। তাই বিজেপি নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরই সাধারণ মানুষের ভরসা করছেন। আমাদের প্রার্থী এবার বিপুল মার্জিনে জিতবেন।’ যদিও সেকথা মানতে নারাজ বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবদাস মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘ভোটের জন্য কাকও ময়ূর সাজতে চাইছে। এসব করে লাভ হবেনা। মতুয়াদের একমাত্র আস্থা ঠাকুরবাড়ি। শান্তনু ঠাকুরের জয় সময়ের অপেক্ষা।’
বনগাঁ কিন্তু অন্য কথা বলছে। চুপিসারে...।