সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মক্ষেত্রে বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার ... বিশদ
১৯৭২ সালের অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে তথাকথিত ‘নিচু জাত’ বাল্মিকী পরিবারে জন্ম হয় ভবানীর। সাতটি ভাই-বোনকে নিয়ে সংসারে অনটন নিত্যসঙ্গী ছিল। মাত্র ১৩ বছর বয়সে হিজরা সম্প্রদায়ে যোগ দিতে ঘর ছাড়েন তিনি। পুরনো দিনের স্মৃতি হাতড়ে ভবানী বলেন, ‘অন্যদের মতোই আমাকেও ছোটবেলায় প্রচুর নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে।’ দিনের খাবার জোগাড় করতে একসময় ভিক্ষাবৃত্তি এমনকী যৌনপেশায় নামতেও বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু, হাল ছাড়েননি। তারপর একদিন গুরুর সান্নিধ্যে এসে জীবন পাল্টে যায় তাঁর। গুরুই তাঁকে নাম দেন শবনম। তারপর সেই নাম নিয়ে হজেও যান তিনি। ফিরে এসে ফের পুরনো নাম ভবানীই গ্রহণ করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘আমি তফসিলি জাতির। কিন্তু, আমি সংরক্ষণ চাই না।’
দশ বছর আগে ভোটে দাঁড়ানোর জন্য কংগ্রেসের কাছে টিকিট চেয়েছিলেন তিনি, পাননি। এবারের ভোটে কংগ্রেস ও বিজেপি উভয়ের কাছেই একই আর্জি জানিয়েছিলেন। যদিও, শেষপর্যন্ত অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল তাঁর উপর ভরসা রেখেছে। যুদ্ধটা যে বেশ কঠিন তা মানছেন ভবানী। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের অধিকারের জন্য প্রচুর লড়াই করেছি। আমি যুদ্ধের জন্য তৈরি। আমি এখানে জিততে আসিনি, মানুষকে সচেতন করতে এসেছি।’
আপাতত এলাহাবাদ বা প্রয়াগরাজে নিজের সম্প্রদায়ের সঙ্গেই থাকছেন ভবানী। কুম্ভমেলা চলাকালীনও প্রায় ন’মাস এখানে কাটিয়েছিলেন তিনি। তাঁর ভোটপ্রচারের সিংহভাগ জুড়েই থাকছে বেকারত্বের ইস্যু। ভবানীর কথায়, ‘প্রচারে গিয়ে আমি বেকারত্ব নিয়েই বেশি কথা বলি। কারণ, ওটাকেই আসল সন্ত্রাস বলে মনে করি আমি।’ তিনি জানান, ২০১৫ সালে বজরং দল এবং হিন্দু মহাসভা লিফলেট বিলি করে দাবি করেছিল, রূপান্তরকামী বা কিন্নররা ইসলামিক রীতি-নীতি অনুসরণ করেন বলে তাঁদের হিন্দু বলা হবে না। এরই প্রতিবাদে উজ্জয়িনীতে ২০১৬ সালে কিন্নর আখড়া গঠন করে আন্দোলন শুরু করেন রূপান্তরকামীরা। ভবানী বলেন, ‘আমরা তোমাদের সমাজেরই অংশ এবং আমাদের স্বাধীনভাবে ধর্মাচরণের অধিকার রয়েছে।’ তাঁর মতে, বিজেপির উমা ভারতী এবং যোগী আদিত্যনাথের মতো তিনিও একজন ‘সাধ্বী’ বা ‘যোগী’। তাই ওই দুই প্রথম সারির রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মতো তাঁরও ভোটে লড়ার পূর্ণ অধিকার রয়েছে।