সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মক্ষেত্রে বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার ... বিশদ
যাদবদের এই খাসতালুকে এবার লড়াই দুই যাদবের মধ্যেই। এসপি প্রধান অখিলেশ যাদবের বিরুদ্ধে ভোজপুরী তারকা দীনেশলাল যাদব ওরফে নিরাহুয়াকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। তারকার রোড শো এবং জনসভায় ভালো ভিড়ও হচ্ছে। তা সত্ত্বেও বাবা মুলায়ম সিং যাদবের খাসতালুক আজমগড়ে এবার সুবিধাজনক অবস্থাতেই রয়েছেন অখিলেশ। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির রামকান্ত যাদবকে ৬৩ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে ছিলেন মুলায়ম। ২০১৭ সালে আজমগড় লোকসভার অন্তর্গত পাঁচটি বিধানসভা আসনের মধ্যে তিনটিতে জয়ী হয়েছিল এসপি। দু’টি কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিল বিএসপি। দুই দলের জোটে সেই অঙ্কে এবার শুরু থেকেই এগিয়ে রয়েছেন এসপি প্রধান।
সংবাদ সংস্থাকে অখিলেশ জানিয়েছেন, ‘দলের নেতারাই আমাকে এই আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। পার্টিই আমাকে এখান থেকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেয়। আমি তাতে সম্মত হই।’ তাঁর দাবি, বাবা সাংসদ এবং তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় আজমগড় শহরের উন্নতির জন্য একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। বিজেপি যে পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসওয়ের কথা বলছে, তাও তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত।
২০১৬ সালে রাজ্যের পক্ষ থেকে ভোজপুরী তারকা নিরাহুয়াকে ‘যশ ভারতী’ পুরস্কার দিয়েছিলেন অখিলেশ। তিনিই এবার বিজেপি প্রার্থী। যদিও তা নিয়ে আপত্তির কিছু দেখছেন না এসপি প্রধান। একই দাবি ভোজপুরী তারকারও। বিজেপি প্রার্থীর জানিয়েছেন, ‘আমি ১২ বছর ধরে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছি এবং নানা পুরস্কারও পেয়েছি। অখিলেশজি আমাকে যশ ভারতী দিয়েছেন। কিন্তু এর মানে এই নয় যে আমি তাঁকে সমর্থন করব।’ এসপি যাদবদের শুধু ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করেছে বলেও অভিযোগ তাঁর। রাজনৈতিক মহলের অবশ্য ধারণা, অখিলেশের বিরুদ্ধে ভোজপুরী তারকাকে প্রার্থী করে মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছে বিজেপি। কেন্দ্রের যুব এবং মধ্যবিত্তদের সমর্থন পাচ্ছেন নিরাহুয়া। যদিও, ইভিএমে তার প্রতিফলন কতটা হবে, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই।
বাটলা হাউস এনকাউন্টারের প্রভাব কিন্তু এই কেন্দ্রে কম নয়। বিজেপি আজমগড়ের উপর থেকে সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর তকমা সরাতে কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলেই দাবি স্থানীয় চা বিক্রেতা মহম্মদ মুস্তাকের। সেই কারণে মানুষ এবার মহাজোটের প্রার্থী অখিলেশকে সমর্থন করবে বলেই মনে করছেন তিনি। একই মত মুবারকপুরের মাসুদ আখতারেরও। তাঁর কথায়, এখানকার নির্বাচন পুরোপুরি জাতপাতের অঙ্ক মেনে হয়। এবং সেই হিসেবে অখিলেশ এগিয়ে। ২০১৪ সালে মোদিঝড়েও রামকান্ত যাদব এখানে জেতেননি। তাই নিরাহুয়ার কোনও সম্ভাবনা দেখছেন না তিনি। যদিও দলিত ভোট পুরোপুরি অখিলেশ পাবেন না এবং মোদি হাওয়ায় জোর লড়াই হবে বলে আশাবাদী বিজেপি সমর্থক সুরেশ গুপ্তা। নির্বাচনী হাওয়ার মধ্যে গ্রামের নাম থেকে সংবাদমাধ্যমের দেওয়া ‘সন্ত্রাসী’ বদনাম ঘোচাতে চাইছে সঞ্জরপুর। রাজনীতিকদের থেকে আর কিছু চান না গ্রামবাসীরা। সমঝোতা এক্সপ্রেস এবং মালেগাঁও বিস্ফোরণের অভিযুক্তরা মুক্তি পেয়েছেন। এবার গ্রামের যুবকরাও যাতে ন্যায়বিচার পায়, সেই প্রার্থনা করছেন জয়পুর জেলে বন্দি সন্দেহভাজন জঙ্গি মহম্মদ সইফের বাবা মহম্মদ শাদাব।
এই কেন্দ্রে প্রভাব রয়েছে মূলত যাদব, জাতভ এবং মুসলিমদের। এবাই মহাজোটের মূল ভোট ব্যাঙ্ক। কেন্দ্রের প্রায় ১৭ লক্ষ ভোটারের মধ্যে চার লক্ষই যাদব সম্প্রদায়ের। এছাড়া তিন লক্ষ মুসলিম এবং দু’লক্ষ ৭৫ হাজার দলিতদের বাস এই কেন্দ্রে। ১৯৯৬ থেকে এই আসনে শুধু মুসলিম এবং যাদবরাই জিতে আসছেন। ১৯৯৬ এবং ১৯৯৯ সালে এসপির হয়ে জিতেছিলেন রামকান্ত যাদব। ২০০৪ সালে বিএসপি এবং ২০০৯ সালে বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৮ এবং ২০০৮ সালের উপনির্বাচনে এখানকার সাংসদ হয়েছিলেন বিএসপির আকবর আহমেদ ডাম্পি। গত নির্বাচনে এসপি-বিএসপি গত নির্বাচনে ৬৩ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছিল। সেই অঙ্কেই এবার এগিয়ে অখিলেশই।