ডাঃ পার্থপ্রতিম সেন, প্রত্যক্ষদর্শী: বাড়ির কাছেই তো। প্রায়ই যাই ওই মলে। একটা হাসপাতালে চেম্বার বা অপারেশন সেরে অন্য হাসপাতালে রোগী দেখতে যাওয়ার আগে কিছুটা সময় পেলে অ্যাক্রোপলিস মলে গিয়ে একটু কফি খেয়ে, জিরিয়ে, আবার বেরিয়ে পড়ি। শুক্রবারের রুটিনও তেমনটাই ছিল। বেলা ১২টা নাগাদ যাই সেখানে। প্রথমেই খটকা লাগে। দেখি গেটে কোনও নিরাপত্তারক্ষী নেই। কখনও এমনটা দেখিনি! যাই হোক, গাড়ি নিয়ে একটু এগিয়ে পার্কিংয়ের চালান কাটাই। তারপর অন্যদিনের মতো গাড়ি রাখতে বেসমেন্টে চলে গেলাম। এবার আর খটকা নয়, ছ্যাঁত করে উঠল বুকটা! বেসমেন্টের এসি’র ডাক্ট থেকে দেখি গলগল করে কালো ধোঁয়া বেরচ্ছে! হঠাৎ কেন এমন হবে! গাড়ি রাখতে না রাখতেই শুনি পার্কিংয়ের কর্মীরা বলাবলি করছে, আগুন লেগেছে! কিন্তু গাড়ি যে আসতেই থাকছে। কেউ বিন্দুমাত্র বারণও করছে না। স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে হইচই করে আনন্দ করতে লোক তো আসছে! তাঁরা জানেনও না, এখানে থাকলে কত বড় বিপদ হতে পারে। পরক্ষণেই ভাবলাম, ওঁদেরই বা দোষ দিই কী করে! নিশ্চয়ই কর্তৃপক্ষ কিছু বলেনি। ওঁরাও রোজগারের জন্য গাড়ি পার্কিং করিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় যদি হঠাৎ ঘোষণা হয়— সবাইকে বেরিয়ে যেতে হবে, বেসমেন্টে
গাড়ি নিয়ে হুড়োহুড়িতে কী হতে পারে, বুঝতে পারছেন! মন বলল, এখানে থাকা মানে যেচে বিপদ ডেকে আনা! এদিকে সবে ঘণ্টা পিছু ৩০ টাকার পার্কিং কুপন কাটা হয়েছে। চালককে বললাম, আর সময় নষ্ট নয়, এখান থেকে বেরতে হবে। ২-৩ মিনিটও হয়নি, পার্কিংয়ের কর্মীরা এসে টাকা চাইতে শুরু করে দিল। ভাবলাম, ৩০ টাকার জন্য মায়া করে কী লাভ! জীবন অনেক মূল্যবান। দুরুদুরু বুকে বেরিয়ে পিছন ফিরে মলের দিকে তাকাতেই দেখি, কী সাংঘাতিক কাণ্ড! উপরের তলাগুলি ধোঁয়ায় দেখাই যাচ্ছে না। পথচলতি মানুষজন মোবাইল ক্যামেরায় ছবি তুলতে শুরু করে দিয়েছেন! রাগ আরও বাড়ল। এই পরিস্থিতিতে মল কর্তৃপক্ষ মানুষকে কোন আক্কেলে ভিতরে যেতে দিচ্ছিল?