নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ১০ বছরের ছেলে ও স্বামীকে নিয়ে ভরা সংসার। সেই সংসার ছেড়ে ফেসবুক বন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে পালাতে গিয়ে প্রতারিত হলেন দক্ষিণদাঁড়ির এক মহিলা। সোনার গয়না খুইয়ে এখন সর্বস্বান্ত তিনি। প্রেমিকের কথায় স্বামী-সন্তান ছেড়ে ইএম বাইপাসের ধারে আনন্দপুরে একটি জায়গায় এসে গয়না খুইয়েছেন তিনি। মহিলার দাবি, ওই যুবক বিয়ে করার কথা বলে তাঁর থেকে গয়নাগুলি নেয়। এরপর তাঁকে দাঁড়াতে বলে ওই গয়নাগুলি এক আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে আসার নাম করে চম্পট দেয় অভিযুক্ত যুবক। তিনি সেখানে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করলেও সে আর ফিরে আসেনি। ঘটনার তিন মাস পর ওই মহিলা পুলিসের দ্বারস্থ হন। তাঁর দাবি, প্রায় দু’-তিন লাখ টাকার সোনার গয়না খোয়া গিয়েছে তাঁর। প্রেমিকের ঠিকানাও তিনি জানেন না। শুধু মুখের কথায় বিশ্বাস করে সংসার ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন নতুন ঘর বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু, সেখানে আচমকা ওই যুবক গয়নাগুলি নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। এরপর তাঁর টনক নড়ে। ফোন বন্ধ করে দেওয়ায় ওই যুবকের সঙ্গে তিনি আর যোগাযোগ করতে পারেননি। মান-সম্মানের ভয়ে তখন কাউকে একথা বলতে পারেননি তিনি। তখনকার মতো বাড়ি ফিরে গিয়ে পরে ভেঙে পড়েন স্বামীর কাছে। পরিবারের অন্যদেরও ঘটনার কথা জানান। পারিবারিক সম্মানের কথা মাথায় রেখে প্রথমে পুলিসে অভিযোগ করতে চায়নি পরিবার। পরে যুবকের ঠিকানার একটি সূত্র পেয়ে ঘটনার মাস তিনেক পর সম্প্রতি লেকটাউন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই মহিলা।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি আনন্দপুর এলাকায় হলেও মহিলার বাড়ি লেকটাউনে। তাই এখানে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্তে নেমে জানা গিয়েছে, বছর পঁচিশের গুণধর যুবকটির বাড়ি বারুইপুরে। ইতিমধ্যেই অন্য একটি ঘটনায় বারুইপুর জেলে রয়েছে সে। তাকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, ওই যুবক সরকারি চাকরি করে, এই পরিচয় দিয়ে মহিলার সঙ্গে ভাব জমিয়েছিল। ফেসবুকে আলাপ গাঢ় হয়ে উঠতেই যুবকটি তাঁকে প্রেম নিবেদন করে। মহিলাকে প্রেমে ভুলিয়ে ব্যক্তিগত বিষয় জেনে নিয়ে সোনার গয়না হাতানোর ফন্দি আঁটে সে। অবশেষে ওই মহিলাকে ফোন করে আনন্দপুরে আসতে বলে। তারপরই গয়না হাতানোর ঘটনা ঘটে।