গৃহে শুভকর্মের আয়োজনে ব্যস্ততা। বন্ধুসঙ্গ ও সাহিত্যচর্চায় মানসিক প্রফুল্লতা। উপার্জন বাড়বে। ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, আগে এই কলোনিতে ৫০ থেকে ৬০টি বাঙালি পরিবারের নিজস্ব বাড়ি ছিল। সামনে বাগান, পিছনে গোয়ালঘর, আলাদা স্নানের জায়গা, কর্মচারীদের আলাদা থাকার জায়গা। অন্তত ছ’-সাত কাঠা জমি নিয়ে ছিল এক-একটি বাড়ি। সম্পন্ন গৃহস্থের ছাপ ছিল সার্বিক জীবনযাপনে। এখন এই কলোনিতে টিকে রয়েছে দু’টি পুরনো বাড়ি। একটি হল কেশব নিকেতন। অন্যটিতে থাকেন শ্যামল লাহা ও তাঁর পরিবার। কেশব নিকেতনের একতলায় বর্তমানে মাকে নিয়ে বসবাস করেন শুভম রুদ্র। দোতলায় থাকেন তাঁর দুই কাকা। শুভমের সঙ্গে কথায় কথায় জানা গেল, তাঁর বাবার দাদু, কেশবচন্দ্র রুদ্র ছিলেন হাজারিবাগ আদালতের মস্ত নামকরা উকিল। তিনিই এই বাড়ি বানিয়েছিলেন। তাই বাড়ির নাম কেশব নিকেতন। তাঁদের বাড়িটি এখনও প্রমোটারের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি বলেই টিকে রয়েছে। তবে শুভমের কথায়, ‘এত বড় বড় বাড়ির দেখভাল মানে হাতি পোষা। বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেকের পক্ষেই তা সম্ভব হয় না। তাছাড়া, জীবিকা বা কাজের সূত্রে অনেকে কলকাতায় বা দেশের বাইরে চলে গিয়েছেন। সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের লোক নেই। তাই পুরনো বাড়ি বেচে দেওয়াই একমাত্র উপায় বলে মনে করছেন অনেকে। ফলে যা হওয়ার, তাই হয়েছে। শুধু বাঙালি কলোনি নামটাই রয়ে গিয়েছে। আর বাঙালিদের পুরনো বাড়ি ভেঙে মাথা তুলেছে একের পর এক ফ্ল্যাট। সেখানে শুধু বাঙালি নয়, নানা ভাষাভাষী মানুষের বসবাস।’
তবে হাজারিবাগে এখনও বাঙালি সংস্কৃতিকে ধারণ করে আছে বঙ্গীয় বারোয়ারি দুর্গাবাড়ি। ঝাড়খণ্ড তখন ব্রিটিশদের বেঙ্গল প্রভিন্সের অধীন। তখন থেকেই এই এলাকায় বসবাস মল্লিক, ঘোষ, মুখোপাধ্যায়দের। এঁদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন রায়বাহাদুর যদুনাথ মুখোপাধ্যায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে ইন্দিরা দেবী—বহু বিখ্যাত মানুষ এসে উঠেছিলেন তাঁর বাড়িতে। ১৮৭৬ সালে হাজারিবাগে ব্রাহ্মসমাজ স্থাপন করেছিলেন যদুনাথবাবু। চালু করেছিলেন যদুনাথ গার্লস স্কুল, যা আজ হাইস্কুলে পরিণত হয়েছে। এই দুর্গাবাড়ি স্থাপনেও তাঁর বড় ভূমিকা ছিল। দুর্গাবাড়ির আশপাশেও রয়েছে বেশ কিছু বাঙালি পরিবারের বাস। তবে এই নির্বাচনী আবহে সংখ্যায় কম হলেও বাঙালিদের ভোট টানতে মরিয়া বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিআই। ভোটবাক্সে হাজারিবাগের বাঙালিদের সমর্থন পেতে চেষ্টায় খামতি রাখছে না কোনও পক্ষই।