কর্ম, বিদ্যা ক্ষেত্রে উন্নতির যোগ। আয় ব্যয় ক্ষেত্রে সমতার অভাব। স্বাস্থ্য ভালো থাকলেও আঘাতযোগ থাকায় ... বিশদ
যদিও মামলাকারীরা আদালতে জানিয়েছিলেন, যে সময় সংবিধান সংশোধন করে এই দু’টি শব্দকে প্রস্তাবনায় যুক্ত করা হয়েছিল, তখন দেশে জরুরি অবস্থা জারি। কেউ বিষয়টি সম্পর্কে জানতেন না। কিন্তু বিচারপতিরা তাতে কর্ণপাত করেননি। আবেদনকারীরা মামলাটি বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানোর জন্য আর্জি জানিয়েছিলেন। তাতেও রাজি হননি প্রধান বিচারপতি। তাঁর মতে, সংবিধানের প্রস্তাবনা সংশোধনের ক্ষমতা সংসদের হাতে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আদালতে বিস্তারিত শুনানির কোনও প্রয়োজন নেই।
১৯৪৯ সালে গৃহীত সংবিধানের মূল প্রস্তাবনায় ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ও ‘সমাজতান্ত্রিক’ শব্দ দু’টি ছিল না। ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন, ১৯৭৬ সালে ৪২তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তা প্রস্তাবনার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। সঙ্গে ছিল ‘অখণ্ডতা’ শব্দটিও। কিন্তু ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ও ‘সমাজতান্ত্রিক’ শব্দ দু’টি বাদ দিতে দীর্ধদিন ধরেই সচেষ্ট বিজেপি। সেই কারণে শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন বিজেপির রাজ্যসভার প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী, আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায় ও বলরাম সিং। তাঁদের যুক্তি ছিল, সংবিধানের প্রস্তাবনা এভাবে সংশোধন করা যায় না। বিচারপতি কুমার জানান, সংসদ প্রস্তাবনা সংশোধন করা যাবে না, এমন কোনও বিধিনিষেধ নেই। পরে রায় ঘোষণার সময় প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নাও বলেন, ‘সংবিধানের ৩৬৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদ প্রস্তাবনাও সংশোধন করতে পারে। ফলে সেই সময় সংসদ যা করেছে, তাকে খারিজ করা যায় না।’
এদিন শুনানি চলাকালীন ভারতীয় প্রেক্ষাপটে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ ও ‘সমাজতন্ত্র’-র অর্থ কী, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিচারপতিরা। তাঁরা জানান, বইয়ের পাতায় সমাজতন্ত্রের যে অর্থ লেখা রয়েছে, বাস্তবে ভারতে তা একেবারেই আলাদা। এক্ষেত্রে ‘কল্যাণকারী রাষ্ট্র’ বোঝানো হয়। এর ফলে সরকারকে কোনও বাধার মুখে পড়তে হয় না। বরং এর উপর ভিত্তি করেই বিভিন্ন নীতি নির্ধারণ হয়ে থাকে। ফলে এই নিয়ে ভয়ের কী আছে? সেই প্রশ্নও তুলেছে আদালত।