শরীর-স্বাস্থ্যের আকস্মিক অবনতি। বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে। সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ, ব্যবসায় নতুন সুযোগ ... বিশদ
এমনিতেই আমেথি কেন্দ্রে এবার রাহুল গান্ধীকে না দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়েছিল স্থানীয় নেতৃত্ব। কারণ, গত লোকসভায় হেরে গেলেও আমেথি কেন্দ্রে গত পাঁচ বছর স্মৃতি ইরানি মাটি কামড়ে পড়েছিলেন। স্থানীয় সমস্যায় তাঁকে সবসময় পাশে পেয়েছেন আমেথির মানুষ। জনভিত্তি এবছর ভালোই বাড়াতে সক্ষম হয়েছেন স্মৃতি। তার উপর গত লোকসভা ভোটে রাহুলের সঙ্গে স্মৃতি ইরানির ভোট ব্যবধান খুব বেশি ছিল না। রাহুল গান্ধী পেয়েছিলেন ৪ লক্ষ ৭ হাজার ভোট। সেখানে স্মৃতির ভোট ছিল তিন লক্ষের বেশি। তাই রাহুলকে অন্য কোনও কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। যদিও প্রবল আপত্তি জানান রাহুল গান্ধী নিজেই। তাঁর বক্তব্য, এটা হলে বিজেপি অ্যাডভান্টেজ পেয়ে যাবে। গত চার দশক ধরে আমেথি গান্ধী পরিবারের সঙ্গে থেকেছে। এই কেন্দ্রে প্রায় ৬ লক্ষ মুসলিম ভোটার। কিন্তু এবারের লোকসভা নির্বাচনে আগে আমেথিতে বঞ্চনার অভিযোগে সরব হয়েছেন মুসলিম নেতারা।
১৯৯১ সালের রাজীব গান্ধী এবং ১৯৯৯ সালে সোনিয়া গান্ধীর মনোনয়ন পত্রের প্রস্তাবকারী হিসেবে সই করেছিলেন হাজি সুলতান খান। কিন্তু তাঁর ছেলে হাজি হারুন রশিদের দাবি, স্থানীয় কয়েকজন কংগ্রেস নেতাদের দাপটে তাঁর পরিবার কোণঠাসা। এখন সমগ্র মুসলিম সম্প্রদায় অপমানিত বোধ করছেন। মুসলিমদের কোনও উন্নতি হয়নি। কোনও সমস্যা হলে রাহুল গান্ধীর কাছে পৌঁছতেই পারেননি তাঁরা। এমপিকে কোনওদিনই পাশে পাননি। প্রতিবার অপমানিত হতে হয়েছে। সেই অপমানের বদলা নিতেই তিনি রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে ভোটে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি ঘোষণা করেছেন, আমেথিতে কমপক্ষে সাড়ে ছ’লক্ষ মুসলিম ভোটার আছেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সবাই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোট দেব। তবে, বিজেপিকে রুখতে আমি নিজেই প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সাংবাদিক সম্মেলনে বাবা হাজি সুলতানের সঙ্গে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর কয়েকটি ছবি তুলে ধরেন। তাঁদের ফুরসতগঞ্জের বাড়িতে একাধিকবার এসেছেন রাজীব, সোনিয়া এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি বলেন, আমার বাবা মৌলানা আজাদ, পণ্ডিতজি, ইন্দিরাজি, রাজীবজির জন্য কাজ করেছেন। কখনও ক্ষমতার লোভী ছিলাম না। সবসময় দলের পক্ষে ছিলাম। কিন্তু এখন এমন কিছু হয়েছে, যা অন্য কিছু ভাবতে আমাদের বাধ্য করেছে।
গান্ধী পরিবারের সঙ্গে চার দশক ধরে জড়িত আমেথিতে কেন কঠিন পরীক্ষার মুখে কংগ্রেস? এই প্রশ্নের কোনও সরাসরি উত্তর দেননি কোনও কংগ্রেস নেতা। অনেকের বক্তব্য, বিজেপি ষড়যন্ত্র করে দল ভাঙাতে তৎপর হয়ে উঠেছে। তবে, এই সমস্যা দ্রুত মিটে যাবে বলে আশা করছেন তাঁরা। ১৯৮০ সালে আমেথি কেন্দ্র থেকে প্রথম জয়লাভ করেন ইন্দিরা গান্ধীর ছোট ছেলে সঞ্জয় গান্ধী। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর ১৯৮১ সালের উপনির্বাচনে বিপুল জয় পান রাজীব গান্ধী। এরপর ১৯৮৪, ১৯৮৯ এবং ১৯৯১ সালে পরপর জয়লাভ করেন রাজীব। তাঁর হত্যার পর ১৯৯১ সালে ওই আসনে উপনির্বাচনে জেতেন সোনিয়া গান্ধী। ১৯৯৯ সালেও তিনিই জয়লাভ করেন। এরপর ২০০৪ সালে ছেলে রাহুল গান্ধীকে আসনটি ছেড়ে দেন।