পড়ে গিয়ে বা পথ দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্তির যোগ থাকায় সতর্ক হন। কর্মে উন্নতি ও সাফল্যের যোগ। ... বিশদ
জগৎবল্লভপুর দক্ষিণ সার্কেলের মাজু গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত এলাকায় রয়েছে চংঘুরালি ঘণ্টেশ্বরী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৬২ সালে গ্রামের সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত হরিপদ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মায়ের স্মৃতিতে এই স্কুল চালু করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল, গ্রামের ছেলেমেয়েদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটানো। স্কুলের নিজস্ব পাকা ভবন রয়েছে। রয়েছে পানীয় জলের ব্যবস্থা। কিন্তু গত কয়েক বছরে পড়ুয়ার সংখ্যা ব্যাপক কমে গিয়েছে। বর্তমানে পড়ুয়া রয়েছে মাত্র ২০ জন। শিক্ষক দু’জন। স্কুলেই একটি অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার চলে। সেখানে প্রায় ৩০টি শিশু রয়েছে। কিন্তু স্কুলে দিনে দিনে পড়ুয়ার সংখ্যা কমায় শিক্ষক থেকে স্থানীয় সমাজকর্মীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সচেতনতার অভাবে অভিভাবকদের একাংশ নিজে থেকে শিশুদের এই স্কুলে ভর্তি করতে নিয়ে আসছেন না। পাশাপাশি অনেকেই স্থানীয় হাইস্কুল লাগোয়া প্রাথমিক স্কুলে তাঁদের সন্তানদের ভর্তি করতে চাইছেন।
নতুন শিক্ষাবর্ষে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়াতে এবার গ্রামে গ্রামে গিয়ে সচেতনতার প্রচার কাজ করছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম পাত্র ও সহকারী শিক্ষক তামসী ঘোষ। চংঘুরালির শেখপাড়া, ষষ্ঠীতলা, হাজিপাড়া, মান্নাপাড়ায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্কুলে ভর্তির ফর্ম নিয়ে ঘুরছেন তাঁরা। এই কাজে এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় একটি হাইস্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক অরূপরতন মাইতি ও সমাজকর্মী সৌরভ দত্ত।
স্কুলের শিক্ষার পাশাপাশি পড়ুয়াদের জন্য ঘরোয়া পরিবেশ কতটা জরুরি, গ্রামবাসীদের তা বোঝাচ্ছেন শিক্ষকরা। প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম পাত্র বলেন, ‘পড়ুয়াদের পড়াশোনার প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে বিভিন্ন চার্ট ও মডেল দেখিয়ে পড়ানোর উপর গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। পাশাপাশি ছবি আঁকা, খেলাধুলোর মতো অতিরিক্ত দক্ষতার বিকাশ ঘটাতেও আমরা বাড়তি নজর দিচ্ছি। আশা করছি এ বছর পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়বে।’ গত এক সপ্তাহে গ্রামে গ্রামে প্রচারের ফলে ইতিমধ্যেই ছ’জন নতুন পড়ুয়া ভর্তি হয়েছে স্কুলে। অভিভাবকদের একাংশ জানিয়েছে, মিড ডে মিলে মাসে অন্তত একদিন যাতে শিশুরা ভালো খেতে পারে, সেজন্য শিক্ষকরা নিজেদের উদ্যোগেই মাংস রান্নার ব্যবস্থা করেন। আমরাও চাই, এই স্কুলে আবার আগের মত পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়ুক।
স্থানীয় সমাজকর্মী সৌরভ দত্ত বলেন, ‘গ্রামের বেশিরভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়ুয়ার অভাবে ধুঁকছে। এটা খুবই দুশ্চিন্তার। এর জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’