সংবাদদাতা, ঘাটাল: নির্বাচন সম্পর্কে পড়ুয়াদের ধারণা দিতে জাতীয় ভোটার দিবসে  ঘাটাল শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের নিশ্চিন্দিপুর হাইস্কুল  এক অভিনব উদ্যোগ নিল। দেশের সাধারণ নির্বাচনের আদলে স্কুলের ক্যাপ্টেন নির্বাচনের আয়োজন করে ছাত্রছাত্রীদের ভোটার লিস্ট, ব্যালট পেপার এবং ভোট দেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা দেওয়া হল।  বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভৈরবচন্দ্র পণ্ডিত বলেন, স্কুলের পড়ুয়াদের সমস্যা, প্রস্তাব, দাবি সহ নানাবিধ বার্তা স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরতেই ওই স্কুলে প্রত্যেক বছর কোনও একজন ছাত্র বা ছাত্রীকে ক্যাপ্টেন হিসেবে মনোনীত করা হয়। এবার জাতীয় ভোটার দিবসে দেশের সাধারণ নির্বাচনের নিয়মাবলি ও পদ্ধতি অনুসরণ করে শনিবার এই অভিনব আয়োজনের মাধ্যমে আজকের ছাত্রছাত্রী তথা আগামী দিনে ভোটারদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি পরিচয় করানো হয়।
এই নির্বাচনের জন্য কয়েকদিন আগে থেকেই মনোনয়ন জমা, ভোটার লিস্ট তৈরি, ব্যালট পেপার ছাপানো এবং ভোটার স্লিপ বিতরণের মতো সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক চিন্ময় আদক বলেন, ক্যাপ্টেন পদে তিন প্রার্থী ছিল। নবম শ্রেণির বিল্টু মান্না, দশম শ্রেণির মোনালিসা খাঁ এবং সপ্তম শ্রেণির সোনালি ঘোড়ই। তাদের প্রতীক ছিল যথাক্রমে খাতা, বই ও পেন। নির্বাচনী প্রচারে তিন প্রার্থীই তাদের অনুগামীদের নিয়ে ক্লাসে ক্লাসে প্রচার চালিয়েছে।
ভোটদানের দিন স্কুলে তৈরি করা হয়েছিল একটি আদর্শ ভোটকেন্দ্র। ওই স্কুলের প্রাক্তনী সোমদত্তা হড়, স্নেহা মুখোপাধ্যায়, অনুশ্রী সেনাপতি এবং অঙ্কিতা সর্দার যথাক্রমে প্রিসাইডিং, প্রথম পোলিং, দ্বিতীয় পোলিং এবং তৃতীয় পোলিং অফিসার হিসাবে ভোট নিতে আসেন।  ভোটার লিস্ট নিয়ে বসেছিল প্রত্যেক প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট। ছাত্রছাত্রীরা আধার কার্ড বা জন্ম শংসাপত্র দেখিয়ে ভোটার রেজিস্টারে সই করে ভোট দিতে প্রবেশ করে। ভোটকর্মীরা ভোটারদের বাম হাতের তর্জনীতে নীল নেলপালিশ দিয়ে চিহ্নিত করে। এরপর ভোটকক্ষে গিয়ে ছাত্রছাত্রীরা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্সে ফেলে দেয়। বুথ এলাকায় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সত্যিকারের একজন সিভিক ভলান্টিয়ারও উপস্থিত ছিলেন। স্কুল খোলার সঙ্গে সঙ্গে এদিন ভোট কেন্দ্রের সামনে পরিচয়পত্র হাতে নিয়ে তাদের লম্বা লাইনও দেখা যায়। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ারা এদিনের নির্বাচনে ভোটার হিসেবে ছিল। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে ভোটদান। ভোটার সংখ্যা প্রচুর থাকায় এদিন ভোট গণনা সম্ভব হয়নি।
ওই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও ভোট দেওয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়া হয়। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ছাত্রছাত্রীদের ব্যালট পেপার ব্যবহার, ভোট দেওয়ার পদ্ধতি এবং নির্বাচনের নীতি-নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝিয়ে দেন। ছাত্রছাত্রীরা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সরাসরি অভিজ্ঞতা লাভ করে।